জোড়া গোল করেছেন নেইমার। অবশ্য পিএসজি তারকার দুটি গোলই হয়েছে পেনাল্টি থেকে। অপর তিন গোল এসেছে রিচার্লিসন, নেইমারের পরিবর্তে মাঠে নামা কৌতিনহো এবং রাফিনহার পরিবর্তে মাঠে নামা গ্যাব্রিয়েল হেসুসের পা থেকে।
প্রথমার্ধ শেষ হয়েছিল ২-১ গোলে। ৭ম মিনিটে রিচার্লিসনের গোলের পর ৩১তম মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়া সমতায় ফেরে হাং উই জু-এর গোলে। ৪২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আবারও ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন নেইমার।
৫৭ তম মিনিটে আবারও পেনাল্টি। এবারও স্পট কিক নেন নেইমার এবং ব্রাজিল এগিয়ে গেলো ৩-১ গোলে। ৮০তম মিনিটে নেইমারের পরিবর্তে নামা কৌতিনহো করেন চতুর্থ গোল। ৯০+৩ মিনিটে পঞ্চম ও শেষ গোলটি করেন গ্যাব্রিয়েল হেসুস।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ। তবে দলটার নাম যেহেতু ব্রাজিল, সে কারণে ম্যাচটাও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে সমর্থকদের কাছে। নেইমাররা হতাশও করেননি ভক্ত-সমর্থকদের।
ম্যাচের শুরুতেই গোল আদায় করে নেয় সেলেসাওরা। ৭ম মিনিটে ফ্রেডের কাছ থেকে বল পেয়ে খুব কাছ থেকে ডান পায়ের দারুণ এক শটে দক্ষিণ কোরিয়ার জালে বল জড়ান রিচার্লিসন।
তবে ব্রাজিল এই গোলটি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। নিজেদের মাঠ বলে দক্ষিণ কোরিয়া শুরু থেকেই ছিল উজ্জীবিত। গোল হজম করার পর সেটিকে পরিশোধ করার জন্যও ছিল মরিয়া।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৩১তম মিনিটে গোল শোধ করে দেয় তারা। বক্সের বাম প্রান্ত থেকে ডান পায়ের দারুণ এক শটে ব্রাজিল গোলরক্ষক ওয়েভার্টনকে পরাস্ত করেন হাং উই জু। ১-১ গোলে সমতায় ফেরে দক্ষিণ কোরিয়া।
তবে ৪২তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় ব্রাজিল। এবার গোলদাতা নেইমার। পেনাল্টি কিক থেকে গোল করেন পিএসজিতে খেলা ব্রাজিলিয়ান এই তারকা।
৩৯তম মিনিটেই মূলতঃ বক্সের মধ্যে আলেক্স সান্দ্রোকে বাজেভাবে ফাউল করেন লি ইয়ং। রেফারি খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভিএআর (ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) দেখেন রেফারি। ভিএআর দেখেই পেনাল্টির নির্দেশ দেন তিনি। ৪২তম মিনিটে স্পট কিক নেন নেইমার।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে একটি নিশ্চিত গোল মিস হয় ব্রাজিলের। নেইমারের কর্ণার কিক থেকে ভেসে আসা বলে হেড করেন থিয়াগো সিলভা। কিন্তু বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল পেয়েছিলেন ক্যাসেমিরো। কিন্তু একেবারে গোলপোস্টের সামনে থেকেও বলটি তিনি মেরে দেন উপরের দিকে। ফলে নিশ্চিত গোলের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ব্রাজিলিয়ানরা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ব্রাজিলে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে।
৫৩তম মিনিটে লুকাস পাকুয়েতার দারুণ একটি গোলের সুযোগ কর্নারের বিনিময়ে নষ্ট করে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক কিম সিউং গিউ। কর্নার কিক থেকে ভেসে আসা বল গোলরক্ষক ক্লিয়ার করলেও বল পায়ে থেকে যায় ব্রাজিলের।
পরের মিনিটেই দারুণ একটি আক্রমণ পরিচালনা করে তারা। সেই আক্রমণে বক্সের মধ্যে বল পেলেও তাকে হার্ড ট্যাকল করেন কিম ইয়ং গাউন। পরে রেফারি ভিএআর দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন। এবারও (৫৭তম মিনিটে) স্পট কিক নিতে আসেন নেইমার। তার দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত শট জড়িয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়ার জালে। ব্রাজিল এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে।
৭৮তম মিনিটে নেইমারকে তুলে নিয়ে কৌতিনহোকে মাঠে নামান ব্রাজিল কোচ তিতে। মাঠে নামার ২ মিনিট পরই, ৮০তম মিনিটে গোল করেন অ্যাস্টনভিলায় খেলা কৌতিনহো। কোরিয়ান এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করতে চাইলে বক্সের বাম পাশে বল পেয়েই দুর্দান্ত এক শট নেন। ডান প্রান্ত দিয়ে বল জড়িয়ে যায় কোরিয়ার জালে। ৪-১।
৭৮ তম মিনিটে রাফিনহাকে তুলে নিয়ে ম্যানসিটি স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল হেসুসকে মাঠে নামানে কোচ তিতে। মূলতঃ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে এই ম্যাচটিকে যেন দলের ফুটবলারদের পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্যই বেছে নিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ। ক্যাসেমিরোর পরিবর্তে ফ্যাবিনহো, ফ্রেডের পরিবর্তে ম্যাথিয়াস চুনহা, পাকুয়েতার পরিবর্তে ব্রুনো গুইমারেস, রাফিনহার পরিবর্তে হেসুস, নেইমারের পরিবর্তে কৌতিনহো এবং রিচার্লিসনের পরিবর্তে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে মাঠে নামান তিনি।
ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে, ইনজুরি সময়ে (৯০+৩ মিনিটে) ব্রুনো গুইমারেসের ক্রস থেকে বল পেয়ে বাম পায়ে শটে দক্ষিণ কোরিয়ার জালে পঞ্চমবারের মত বল জড়ায় ব্রাজিল। ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সেলেসাওরা। এর দুই মিনিট পরই রেফারি ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজান।