তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে চামড়ার বড় কারবার হয় বলে ওই সময় সরবরাহ বেশি হয়। ফলে অনেক সময় ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। এজন্য প্রয়োজনে সরকারিভাবে চামড়া কেনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
বুধবার (৮ জুন) বিকেলে চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, শুধু ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা দিয়ে চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। চামড়া শিল্প নিয়ে নতুনভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে।
তিনি বলেন, চামড়ার বাজার তৈরি হয়েই আছে। বাইরে থেকে গবাদিপশু কিনতে হচ্ছে না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সহজেই খাতটি লাভজনক করার সুযোগ আছে। একইসঙ্গে এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
স্থানীয়ভাবে চামড়া কিনে লবণ দিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করলে প্রান্তিক পর্যায়েও ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে আশা করেন নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চামড়া শিল্প উন্নয়নে এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য সবরকম সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ঈদুল আজহা সামনে রেখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, সাভার ট্যানারি শিল্প এলাকার কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্যানারি শিল্পের বর্জ্যের যথাযথ নিষ্কাশন ও কমপ্লায়েন্স অর্জন সাপেক্ষে ট্যানারি মালিকদের পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
টাস্কফোর্সের সভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ট্যানারিগুলো আধুনিকায়ন করতে হবে। কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবণের চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে এবং কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে অপসারণ করত হবে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া ঈদ-পরবর্তী সময় সাভার ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে কাঁচা চামড়ার সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকল্পে স্থায়ী কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন শিল্প সচিব।
সভায় চামড়া শিল্পের বিকাশকে সুসংহত এবং সাবির্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই করতে ‘চামড়া শিল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ’ গঠন, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী চামড়া সংরক্ষণাগার স্থাপন, প্রয়োজনীয় লবণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে লবণ ডিলার নিয়োগ, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে সব স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে একটি ‘কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল’ গঠন, সঠিকভাবে কোরবানির চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার বিষয়সমূহ বিজ্ঞাপন/টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
টাস্কফোর্সের সভায় আরও অংশ নেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ।