বাজেট ঘোষণার পরের দিন শুক্রবার রাজধানীর লেক শোর হোটেলে জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ পর্যালোচনা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, ‘পাচার করা টাকা কর দিয়ে দেশে আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, এতে সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করা হয়। এটা অনৈতিক। এটা থেকে কোনো অর্থ আসবে না। কারণ যারা দেশের বাইরে টাকা পাচার করে তারা দেশে ফিরে আসার জন্য টাকা পাচার করে না।’
অর্থমন্ত্রী বাজেটে ছয়টি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। সেগুলো হলো- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্য বৃদ্ধির ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান করা; বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার এবং প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ করা; শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা; অভ্যন্তরীণ মল্যূ সংযোজন কর আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ব্যক্তি আয়করদাতা বৃদ্ধি করা; টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা ও রির্জাভ সন্তোষজনক রাখা।
তিনি বলেন, ‘বাজেটে ৫.৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির হিসাব কীভাবে এলো, এটা কীভাবে কমবে তা বলা হয়নি। সারা বিশ্বে অর্থনীতির অস্থিরতা চলছে। সেখানে আমাদের মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমে যাবে সে বিষয় নিয়ে বাজেটে সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতিতে দেখা যায় রাজস্ব আদায়, বেসরকারি খাতে ঋণ, রপ্তানি ভালো অবস্থানে আছে। নেতিবাচক দিকে আছে কিছু সূচক। এর মধ্যে রিজার্ভ নিচের দিকে নামছে। ঋণখেলাপির পরিমাণ বেড়েছে। মুদ্রার অবনমন ঘটছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাজেটে বেশি ফোকাস করা হচ্ছে।’
বাজেটে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য বাড়বে বলা হয়েছে। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব সেটা বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক।
বাজেট ঘাটতি বাস্তবসম্মত নয় বলে মত দেন তিনি। বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫.৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। কিন্তু এটা বাস্তবসম্মত মনে হয়নি। ঘাটতি পূরণে বিদেশি নির্ভরতা বাড়ছে। সেটা কতটা ব্যবহার করতে পারব তা এখন দেখার বিষয়।’
রাজস্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব বোর্ডকে এমন লক্ষ্য দেয়া হয় যা আদায় সম্ভব হয় না। রাজস্ব কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে জোর দিতে হবে।’