দেশের বৃহত্তম জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের মালামাল জব্দ করেছেন আদালত। এক পাওনাদারের দায়ের করা মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতের ক্রোক কর্মকর্তা মোহাম্মদ কবির এই মালামাল জব্দ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদ কবির বলেন, ওয়েস্টার্ন মেরিনের কাছে পাওনা ৭০ লাখ টাকার বিপরীতে দায়ের করা মামলার রায় পান স্থানীয় বাসিন্দা হাজী ছাবের আহাম্মদ। গত ৭ এপ্রিল আদালতের দেয়া রায়ে ওয়েস্টার্ন মেরিনের মালামাল জব্দের আদেশ দেয়া হয়। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির ইয়ার্ড থেকে ১৪ থেকে ১৫ ধরনের যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়। এসব যন্ত্রপাতির আনুমানিক মূল্য ৭০ লাখ টাকা।
আদালতের তথ্যমতে, ২০২০ সালে এই পাওনা আদায়ে মামলা দায়ের করেন স্থানীয় বাসিন্দা হাজী ছাবের আহাম্মদ।
ছাবের আহাম্মদ বলেন, ইয়ার্ডে মালামাল সরবরাহ বাবদ এই টাকা পাওনা ছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা দীর্ঘদিনেও এই টাকা শোধ না করায় মামলা দায়ের করা হয়। এই পাওনা ছাড়া ইয়ার্ড মালিকদের কাছ থেকে আমার ৫ একর জমি ভাড়া বাবদ আরো বহু টাকা পাওনা রয়েছে।
ছাবের আহাম্মদ ছাড়াও ইয়ার্ড মালিকদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন ভূমি মালিক আবুল বশর আবু। চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ না করা অথবা ভূমি ছেড়ে না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এই উচ্ছেদ মামলা দায়ের করা হয়।
২ হাজার কোটি টাকার বেশি দেনার ভারে জর্জরিত দেশের বৃহত্তম জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড।
২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১৫০টি জাহাজ নির্মাণ করে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ বিল্ডার্স সুনাম অর্জন করে। এই সময়ে ১২টি দেশে ৩৩টি জাহাজ রপ্তানি করে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আয় করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু পরিচালকদের অভ্যন্তরীন দন্দ্ব, স্বল্পমেয়াদি চড়া সুদের ঋণ নিয়ে জাহাজ নির্মাণে বিলম্বের কারণে ব্যাংকের চক্রবৃদ্ধি সুদ যোগসহ বিভিন্ন কারণে ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে প্রতিষ্ঠানটির জাহাজ নির্মাণ অনেকটা স্থবির হয়ে রয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ১১টি ব্যাংক ও ৮টি লিজিং কোম্পানির প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আটকে গেছে।