এতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস)সভাপতি মো. শাহিদ-উল মুনির, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরিফ ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষে ব্ক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারির ফলে গোটা পৃথিবীর সব ব্যবসা-বাণিজ্য ও উদ্যোগ বন্ধ হয়ে গেলেও জরুরি স্বাস্থ্যসেবার মতো বন্ধ হয়নি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতগুলো। বরং মানুষ তাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া উদ্যোগ যেমন ই-কর্মাসভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে অফিস, দূরবর্তী শিক্ষা, যোগাযোগ, আর্থিক সাহায্য, ডোনেশন ক্যাম্পেইন, তথ্যসেবা, টেলিমেডিসিনের সাহায্যে স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য সহায়তা, বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা প্রভৃতি চলছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের ওপর নির্ভর করেই। এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে অনলাইন কোর্টের (ই-কোর্ট) মাধ্যমে কেস নিষ্পত্তি করার প্রক্রিয়া। যেখানে স্বাস্থ্য ও কৃষির পরে অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা আইসিটি প্রকল্পগুলোর, সেখানে এই খাতের বরাদ্দকে বাতিল বা সংকুচিত করাটা কতটা যুক্তি যুক্ত হবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন সংশ্লিষ্টরা। কলসেন্টারগুলো কেবল ৯৯৯ এবং ৩৩৩ মাধ্যমেই গত ২ মাসে প্রায় ৭০ লাখ ফোনকলের মাধ্যমে পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে— এটা এ খাতের একটি বড় অবদান বলেও সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। পাশপাশি ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা দিয়ে এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে। এজন্য তাদের সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে অভিনন্দন প্রাপ্য বলেও তারা উল্লেখ করেন।
করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট ব্যবসায়িক মন্দা কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে ইতোপূর্বে অনুদান ও সহজ শর্তে ঋণ চেয়ে সমন্বিতভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠনগুলো আবেদন করে বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী রফতানিমুখী শিল্প, সেবাখাত ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ হিসেবে ঘোষণা করলেও এর সুবিধা আমাদের এ খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিতে পারছে না। কারণ ব্যাংকগুলো বলছে, তাদের কাছ থেকে আগে ঋণ নেওয়া না থাকলে, কিংবা বাড়ি অথবা জমি মর্টগেজ না রাখলে, তাদের পক্ষে লোন দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য এ খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সহজ শর্তে জামানতবিহীন
ঋণ সুবিধা নিতে পারে, সেজন্য সরকারকে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, কোম্পানিগুলো ২ শতাংশ সরলসুদে এক বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ যাতে ঋণ নিতে পারে, সে বিধান থাকা দরকার এ ঋণে। পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারের পরিকল্পনা মোতাবেক বিভিন্ন ই-গভর্নেন্স প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সব ধরনের নাগরিক সেবা অনলাইনে প্রদান করা গেলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়। প্রশ্নের জবাবে এসব সংগঠনের নেতারা (সংগঠনের পক্ষ থেকে) বলেন, আমরা দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের জন্য সরকারের কাছে প্রণোদনা, ঋণের আবেদন করেছি। এছাড়া, সংগঠনের পক্ষ থেকে সদস্যদের মাঝে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। সংগঠনের যেসব সদস্য সহযোগিতা চাইতে পারছেন না, তাদের নাম পরিচয় উহ্য রেখে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ করে ঋণ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।