রাজধানীর নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত গ্রাহকদের মাঝে পানির দাম সমন্বয়ের চিন্তা করছে ঢাকা ওয়াসা।
রোববার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘ঢাকা ওয়াসার এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণবিষয়ক টেকনিক্যাল স্টাডির (কারিগরি গবেষণা) ফলাফল’ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান ওয়াসার কারিগরি উপদেষ্টা মো: তাহমিদুল ইসলাম। ওয়াটার এইড ও ঢাকা ওয়াসা এই গবেষণা করে।
কারিগরি উপদেষ্টার তথ্য অনুযায়ী, উচ্চবিত্তের আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি এক হাজার লিটার পানির জন্য দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা। যেখানে প্রতি হাজার লিটারে উচ্চবিত্তদের জন্য দাম বাড়ছে ২২ টাকা ৩২ পয়সা। নগরে ওয়াসার উচ্চবিত্ত গ্রাহক শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ।
উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের পানির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ টাকা ২৫ পয়সা। এই ক্যাটাগরির গ্রাহক সংখ্যা এক দশমিক তিন শতাংশ।
রাজধানীর মধ্যবিত্ত মানুষ পাবে উৎপাদন মূল্যে পানি। যার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা। যা আগের দামের চাইতে ৯ টাকা ৮২ পয়সা বেশি। আর নগরে ওয়াসার মধ্যবিত্ত গ্রাহক চার শতাংশ।
নিম্নমধ্যবিত্তদের জন্য দাম বাড়ছে তিন টাকা ৫৭ পয়সা। প্রস্তাবিত দাম ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা। আর রাজধানীতে ওয়াসার নিম্নমধ্যবিত্ত গ্রাহকই সর্বোচ্চ। যা ৭৯ দশমিক চার শতাংশ।
নিম্ন আয়ের মানুষ একই পরিমাণ পানির জন্য বিল দেবেন ১২ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে তাদের প্রতি হাজার লিটারে পানির দাম কমছে দু’টাকা ৬৮ পয়সা।
ওয়াসার সাড়ে ১১ শতাংশ বাণিজ্যিক গ্রাহকরা বর্তমানে প্রতি হাজার লিটার পানির জন্য ৪২ টাকা পরিশোধ করছেন। প্রস্তাবিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী ওই বিল আট টাকা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ টাকায়। এর বাইরে উৎপাদন মূল্যের সমান। অর্থাৎ ২৫ টাকা হারে বিল পরিশোধ করবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
ঢাকায় কত ধরনের গ্রাহক রয়েছে, বিশ্বে কোন কোন পদ্ধতি চালু আছে তা নিরীক্ষা করে পানির দাম নির্ধারণের একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে ঢাকা ওয়াসার কারিগরি টিম। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট আইনও আমলে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এলাকাভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণে ঢাকাকে ১০টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একেক জোনে একেক ধরনের দাম হতে পারে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নতুন মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে ওয়াসার পানি উৎপাদন মূল্য ও বিক্রি মূল্যের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তা সমান করা যাবে। অর্থাৎ এ খাতে ভর্তুকি দিতে হবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান।