আলহাজ্ব টেক্সটাইলে নতুন ২ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ

আলহাজ্ব টেক্সটাইলে নতুন ২ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ
শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদে নতুন দুই জন স্বতন্ত্র পরিচালককে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও অবহিত করা হয়েছে। এর ফলে কোম্পানিটিতে বিএসইসির মনোনীত স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা দাঁড়ালো পাঁচ জন।

মনোনয়ন পাওয়া স্বতন্ত্র পরিচালক দুজন হলেন- জনতা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ইন প্রোসেস) মো. জিকরুল হক ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটের সিনিয়র ফ্যাকাল্টি মেম্বার মো. সেলিম। মো. জিকরুল হক কোম্পানিটির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ড. মিলিতা মেহজাবিনের স্থলাভিষিক্ত হবে। আর মো. সেলিমকে নতুন করে কোম্পানিটির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি বিএসইসির মনোনীত চার জন পরিচালক আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের যোগদান করেন। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলে- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সহযোগী অধ্যাপক মিলিতা মেহজাবিন।

এদিকে ধারাবাহিক আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে আসে। দীর্ঘ দুই বছর এক ক্যাটাগরিতে থেকেও কোম্পানিটির কোনও উন্নতি হয়নি। তৎকালীন কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা মাত্র ১২.৭৮ শতাংশ শেয়ার ধারণের মাধ্যমে বিএসইসির সর্বনিম্ন ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশনা ভঙ্গ করেছিল। ফলে ওই সময়ে কোম্পানিটিতে ৮৭.২২ শতাংশ শেয়ারধারণ করেও সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা গত দুইটি হিসাব বছর ধরে কোনও লভ্যাংশ পায়নি। এরই ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে কমিশন আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে।

একইসঙ্গে কোম্পানিটির সার্বিক বিষয় তদারকির জন্য তিন সদস্যের একটি বিশেষ তদারকি কমিটি গঠন করে দেয় কমিশন। গঠিত তদারকি কমিটি সদস্যরা হলেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনীত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম ও ডিএসইর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী।

এছাড়াও জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের শেয়ার দর ছিল ৩১ টাকা ১০ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার রোববার (২৪ জুলাই) সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১২৭ টাকা ৩০ পয়সা। অর্থাৎ দেড় বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯৬ টাকা ২০ পয়সা। ২০১৯ ও ২০২০ সালের কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনও লভ্যাংশ প্রদান করেনি।

তবে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২৬ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৯৩ পয়সা।

এদিকে পরবর্তী হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.০৩ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ০.১৯ টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.০৯ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৩৬ টাকা। আর অর্ধবার্ষিক বা ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.১২ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.১৮ টাকা। এছাড়া তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.১৮ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.২০ টাকা। তিন প্রান্তিক মিলে বা ৯ মাসে (জুলাই, ২০২১-মার্চ, ২০২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.৩০ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৩৮ টাকা।

আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৩ সালের। বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৪৯টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ২৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ, সরকারের হাতে দশমিক ০১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৪ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত