এক যুগ পর যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) নয়াদিল্লিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার পক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার নেতৃত্ব দেবেন। নয়াদিল্লির পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পঙ্কজ কুমার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যৌথ নদী কমিশনের তথ্য বলছে, সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বহমান ৫৪টি নদীর মধ্যে যে অমীমাংসিত ইস্যু, বিশেষ করে কুশিয়ারার পানিবণ্টন, ছয়টি অভিন্ন নদী- মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন ও তিস্তা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া সাম্প্রতিক বর্ষায় দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যা প্রসঙ্গও থাকবে আলোচনার টেবিলে।
পানিসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে একদিন বিরতি দিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বসবে ঢাকা-নয়াদিল্লি। ওই বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। আর নয়াদিল্লির পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত।
গত রোববার (২১ আগস্ট) পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রায় এক যুগ পর হতে যাওয়া জেআরসি বৈঠকের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে অ্যাখ্যা দেন। বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব জানান, নদীতে অনেক ইস্যু। সেই ইস্যুগুলো বৈঠকে আলোচনা হবে। কিছু কিছু ইস্যুতে যদি সমস্যা সমাধান করা যায়, যেমন- কুশিয়ারা, গঙ্গার যে চুক্তি তা শেষ হবে ২০২৬ সালে, সে বিষয়ে কে কী ভাবছে তা জানা যাবে। আরেকটি হচ্ছে, এবার বন্যার সময় দেখেছি যে বন্যা সংক্রান্ত আগাম যে তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ের ফলে আমাদের কিছু সুবিধা হয়েছে। আগামীতে যাতে এটা আরও জোরদার করা যায়।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, নদী মানেই যে পানির হিস্যা তা নয়, আরও অনেক ইস্যু আছে। যে ইস্যুগুলো আমাদের মধ্যে আছে, তা আলাপের মাধ্যমে সমাঝোতা করা সম্ভব।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন নদীর জলসম্পদ বণ্টন, সেচ এবং বন্যা ও এই জাতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে সমঝোতার মধ্যে দিয়ে গঠিত হয় যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি)। সবশেষ ২০১০ সালে জেআরসি বৈঠক হয়েছিল।