ডব্লিউটিওর ‘দ্য কভিড-১৯ প্যানডেমিক অ্যান্ড ট্রেড-রিলেটেড ডেভেলপমেন্টস ইন এলডিসিজ’ শীর্ষক নোটে বলা হয়, উৎপাদনমুখী এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর পোশাক রফতানি আয়ে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পতন ঘটতে পারে। অদূর ভবিষ্যতে যেসব দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে ছিল, তাদের সে সম্ভাবনায়ও প্রভাব ফেলতে পারে চলমান মহামারী।
সংস্থাটি বলছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) ক্ষেত্রে রফতানি আয় সাধারণত প্রধান পাঁচ রফতানি গন্তব্যে কেন্দ্রীভূত। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, বাংলাদেশের শীর্ষ বাজার জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ফ্রান্স কভিড-১৯-এর কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের মোট রফতানির ১৫ দশমিক ১ শতাংশ আসে জার্মানি থেকে। ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এছাড়া যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ফ্রান্স থেকে আসে যথাক্রমে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, ৭ ও ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
নোটে বাংলাদেশের রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর বরাত দিয়ে জানানো হয়, চলতি বছরের এপ্রিলে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি কমেছে ৮৩ শতাংশ। এ সময় বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার কয়েক বিলিয়ন ডলারের রফতানি ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত করা হয়েছে। আবার রফতানি গন্তব্যগুলোয় খুচরা বিক্রেতারাও এরই মধ্যে দেউলিয়াত্ব থেকে সুরক্ষা নিতে শুরু করেছে, যা দেশগুলোর রফতানি চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলো সম্পর্কে নোটে আরো বলা হয়, এসব দেশ এখন রফতানি আয়ে বড় ধরনের পতনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল হতে শুরু করা ছাড়াও রেমিট্যান্স ও মোট জাতীয় আয়ও কমে যেতে পারে দেশগুলোর। উত্তরণ প্রক্রিয়ায় সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে এসব দেশের স্কোর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কারণ সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোকে সম্পদ নিয়ে সংগ্রাম করতে হবে। দীর্ঘায়িত মন্দাও এ উত্তরণের সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
এদিকে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০২১-এ এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য মূল্যায়িত হওয়ার প্রক্রিয়া থেকে বাংলাদেশ নিজেকে পিছিয়ে নেবে কিনা, তা অনেকটাই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রেক্ষাপটের ওপর নির্ভর করছে।