রেলমন্ত্রী বলেন, আমার সংসদীয় আসনে বোদা-মাড়েয়া এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি আউলিয়া ঘাটে একটি ব্রিজ করে দেওয়ার। আমি এমপি হওয়ার পর কথা দিয়েছিলাম, এখানে সেতু হবে। ইতোমধ্যে এখানে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব একনেকে পাস হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রথম ওয়াই ব্রিজ হয়েছে কুমিল্লার বাঞ্ছারামপুরে। সেটি ছোট। আর পঞ্চগড়ের বোদা মাড়েয়ায় ওয়াই ব্রিজটি হবে দেশের সবচেয়ে ব্রিজ। এটি মাড়েয়া থেকে কালিয়াগঞ্জ, অপর সংযোগটি হবে বড়শশীতে। ব্রিজের নকশা তৈরি করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। আগামী শুক্রবার বুয়েট থেকে ১০ সদস্যের একটি টিম আসছে বোদার এই আউলিয়া ঘাটে। এসে তারা জানানোর পর স্টিমেট হবে। স্টিমেট হলে দরপত্র আহ্বান করেই আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, পঞ্চগড়ের মাড়িয়াগঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ দুটি ইউনিয়নকে পৃথক করেছে করতোয়া নদী। এই অঞ্চলে দীর্ঘ দিন ধরেই একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল স্থানীয়রা। বোদা উপজেলায় যাতায়াত করতে প্রতিদিন হাজারও মানুষ মাড়েয়া-কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের বিভাজন করা করতোয়া নদী পার হয় ডিঙ্গি নৌকায়। নৌকাগুলো চলে স্যালো মেশিনের মাধ্যমে। এসব নৌকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পারাপার হয়ে থাকে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর বোদার মাড়েয়ায় বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার দিনে বিশেষ পূজা অর্চনার আয়োজন করা হয়। জনশ্রুতি রয়েছে, সীতার ১৬টি খণ্ডের একটি খণ্ড এই মন্দিরে রাখা হয়েছিল। এ কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই মন্দিরে পূজা দিতে আসেন অগণিত মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরেই মাড়েয়া, কালিয়াগঞ্জ থেকে করতোয়া নদী পার হয়ে এ বদেশ্বরী মন্দিরে আসতে মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মাড়েয়া-কালিয়াগঞ্জ মধ্যকার বিভাজন করা করতোয়া নদীতে একটি সেতু থাকলে আজ স্মরণকালে এমন ভয়াবহ নৌকা ডুবে এত মানুষের মৃত্যু দেখতে হতো না। এ ঘটনায় ৭২ জনের প্রাণ গেছে। ৭২ জনের মধ্যে ৬৯ জনের লাশ পাওয়া গেছে, বাকি ৩ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। এজন্য শোক থাকতে থাকতেই করতোয়ায় সেতু নির্মাণ চান। রেলমন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসের দ্রুত বাস্তবায়ন চান তারা।