চিনির বাজার হঠাৎ অস্থিতিশীল হওয়ার পরিস্থিতিতে পণ্যটি সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।সোমবার থেকে সংস্থাটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থানে ৫৫ টাকা কেজি দরে চিনি বিক্রি করবে।দুপুর ১টা থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সাশ্রয়ী মূল্যে চিনি বিক্রি চলবে।
রোববার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে টিসিবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিসিবি পরিবার কার্ডধারীদের বাইরে সাধারণ মানুষ ৫৫ টাকা দরে টিসিবির এই চিনি কিনতে পারবেন। একজন ক্রেতা এক কেজির বেশি চিনি কিনতে পারবেন না।তবে সোমবার কোন কোন এলাকায় টিসিবির চিনি বিক্রি হবে- তা জানানো হয়নি।
চলতি মাসের প্রথম দিকে খোলা চিনির দাম প্রতি কেজি ৯০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। তবে এই দাম কার্যকর হয়নি। গত সপ্তাহের শুরুতেও চিনির দাম কেজিতে ৯৫ টাকার ওপরে ছিল। গত বৃহস্পতিবার খোলা চিনির দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
হঠাৎ চিনি দাম সেঞ্চুরি হওয়ায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিনির বাজার নিয়ে চিন্তিত বাংলাদেশ ব্যাংকও। রোববার বিকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, চাহিদার বিপরীতে দেশে পর্যাপ্ত চিনি আমদানি করা হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দেশে চিনির সংকট হওয়ার কোনো কারণ নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় এ বছর চিনি সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। শিগগিরই আরো ১ লাখ টন চিনি আমদানি করা হচ্ছে। একটু তদারকি করলে চিনির বাজার স্বাভাবিক হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে ১৭ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করা হয়েছিল। এ বছর প্রথম নয় মাসে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশে বছরে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন। যার সিংহভাগই আমদানি করতে হয়।
সম্প্রতি চাহিদার অনুপাতে বাজারে যোগান কম হওয়ায় চরম সংকট তৈরি হয়েছে চিনির সরবরাহ চেইনে। এতে হু হু করে বাড়ছে অন্যতম এ ভোগ্যণ্যের দাম। ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ চিনিতে বেড়েছে ৩০০-৩৫০ টাকা। সংকটের কথা বলে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে চিনি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক এলাকায় প্যাকেটজাত চিনি পাওয়াই যাচ্ছে না।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত শনিবার অভিযানে নামে।কিন্তু কোনো সুরাহা করতে পারেনি। সংস্থাটির অভিযানে বাজারে চিনি সংকটের সত্যতা মিলেছে।