সূর্যোদয়ের দেশ জাপান। এবার বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে সূর্য উঠাল ব্লু সামুরাইরা। ফেবারিট হিসেবে আগমন ঘটেনি কাতার বিশ্বকাপে। আসরের শুরুতেই অঘটনের জন্ম দিয়ে জাপান এখন নকআউট পর্বে। প্রথমে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে আসর শুরু তাদের। গ্রুপ ‘ই’র শেষ ম্যাচে ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে হারিয়ে এখন যেকোনো বড় দলের জন্য তারা এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। অন্য দিকে গ্রুপ ‘এফ’র দ্বিতীয় স্থানে থেকে পরের রাউন্ডে ২০১৮ রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া। এবারের আসরের অন্যতম ধারাবাহিক দল জাপানকে মোকাবেলার জন্য বাড়তি পরিকল্পনা মাথায় নিয়েই মাঠে নামছে ক্রোয়েটরা।
আল জানুব স্টেডিয়ামে নকআউট পর্বে আজ রাত ৯টায় ক্রোয়েশিয়ার মোকাবেলা করবে এশিয়ান জায়ান্টরা। হাজিমে মোরিইয়াসুর জাপান শীর্ষ সারির দল স্পেন ও জার্মানিকে টপকে গ্রুপ ‘ই’র শীর্ষস্থান দখল করে। স্পেনের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয়ে শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে জাপান। আয়ো টানাকার দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাপানই গ্রুপ সেরা। দ্বিতীয় গোলের জোগানদাতা কাওরু মিটোমার পাসে টানাকার গোলে জাপানিদের শেষ ষোল নিশ্চিত হয়। এই পাস নিয়েই বিতর্ক দেখা দেয়। বলটি পাস দেয়ার আগে সাইডলাইন অতিক্রম করেছে এমনটি মনে হলেও ভিএআর সুক্ষ বিচারে তা মেনে নেয়নি।
জার্মানদের হারিয়ে বিশ্বকাপে সূচনা জাপানের। ২০১০ ও ২০১৪-এর দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারানো দলটি নকআউট পর্বে খেলবে- এটাই স্বাভাবিক। রাশিয়া বিশ^কাপ গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল জাপানকে। এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপের কোয়ার্যার ফাইনালে না খেললেও জাপান এর আগে দুই আসরে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছিল। ২০০২ ও ২০১০ আসরের পর এবার নকআউটে তৃতীয়বারের মতো আগমন সূর্যোদয়ের দেশটির। মোরিইয়াসুর সুপার সাব যদি আরো একবার জ্বলে ওঠে তাহলে ম্যাচে যেকোনো কিছুই সম্ভব। উজ্জীবিত জাপান সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে।
এ দিকে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের মাধ্যমে নক আউট পর্বে ক্রোয়েশিয়া। মরক্কোর পর গ্রুপ ‘এফ’র দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত হয় জøাটকো ডালিচের ক্রোয়েশিয়ার। মরক্কোর বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরু করলেও কানাডাকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে ক্রোয়েটদের দ্বিতীয় রাউন্ড মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছিল। টানা নয় ম্যাচে অপরাজিত থেকে শেষ ষোলতে এসেছে ক্রোয়েশিয়া। আগের দুই আসরেই এই ধাপ পার করে শেষ আট নিশ্চিত করা ক্রোয়েটরা ইতিহাস থেকেও আত্মবিশ্বাস পেতে পারে। যদিও কাউন্টার অ্যাটাকে দুর্দান্ত খেলা ব্লু সামুরাইদের বিপক্ষে কোনোকিছুই সহজভাবে নিচ্ছে না ডালিচের দল। কারণ ২৫ বছর আগে প্রথম মোকাবেলায় ৪-৩ গোলে হেরেছিল ক্রোয়েশিয়া। এরপর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে জাপানকে হারানোর পর ২০০৬ সালে আবার গোলশূন্য ড্র। কাতারে অবশ্য একটু বেশি সতর্ক ক্রোয়েটরা।
জাপান এ পর্যন্ত তিনবার ক্রোয়েশিয়ার মোকাবেলা করে। এর মধ্যে ক্রোয়েটরা জয় পেয়েছে একবার। আর ড্র একটি ম্যাচ। দুই দলের প্রথম সাক্ষাতে ১৯৯৭ সালে কাইরিন কাপ জাপানে জয় পেয়েছিল ৪-৩ ব্যবধানে ব্লু সামুরাইরা। বাকি দুই ম্যাচ ছিল বিশ্বকাপ আসরে। এবার মেগা আসরে তৃতীয় সাক্ষাৎ জাপান ও ক্রোয়েশিয়ার।
অর্থসংবাদ/কেএ