শেষবার বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০টি বছর পার হয়ে গেছে ব্রাজিলের। জাপান-কোরিয়া থেকে শেষবার বিশ্বকাপ জয়ের পর আরও চারটি আসর পার হয়ে গেছে। এই চারটি আসরের মধ্যে তিনবারই বিদায় নিতে হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে, আরেকবার সেমিফাইনাল থেকে।
সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিবার ইউরোপীয় শক্তির কাছেই হার মেনে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে সেলেসাওদের। প্রতিবারই ব্রাজিলের মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়েছে ইউরোপ।
এবারও ব্রাজিলের সামনে ইউরোপ। কাতার বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে আজ ব্রাজিলের মুখোমুখি গতবারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়, কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি।
এবার আবারও ইউরোপের একটি দেশের সামনে নেইমাররা। এবার কী হবে? সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ফুটবলাঙ্গনে। ২০০২ বিশ্বকাপে জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। এর চার বছর পর শেষ আটে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ ছিল ফ্রান্স; কিন্তু জিদানের অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং থিয়েরি অঁরির গোলে সেবার ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নরা।
২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে থেমে যায় ব্রাজিলের দৌড়। সেবারের দলে ব্যাপক রদবদল হয়েছিল। রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদোরা ততদিনে দল ছেড়ে গেছেন। শেষ আটের লড়াইয়ে ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়েছিলো নেদারল্যান্ডস। ব্রাজিল প্রথমে এগিয়ে যায় রবিনহোর গোলে; কিন্তু বিরতির পর খেলার পুরো ছবি বদলে যায়। ওয়েসলি স্নেইডারের জোড়া গোলে এগিয়ে যায় ডাচরা। অ্যারিয়েন রোবেনের বিপজ্জনক দৌড় ব্রাজিলকে বিপন্ন করে তোলে। শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস ২-১ গোলে ম্যাচ জিতে চলে যায় সেমিফাইনালে। ব্রাজিল ফিরে আসে দেশে।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বিধ্বস্ত হয়েছিল ব্রাজিল। ওই ম্যাচটি ব্রাজিল ভক্তরা চিরকাল মনে রাখবেন। জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিলো নেইমারহীন সেলেসাওরা। সেদিন চোখের জলে বিদায় নেন ডেভিড লুইস-অস্কাররা। কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য ব্রাজিল হারিয়েছিল কলম্বিয়াকে। জুনিগার মারাত্মক ফাউলের শিকার হয়ে, কোমারে হাড় ভেঙে মাঠের বাইরে চলে যান নেইমার। শেষ চারের লড়াইয়ে নামা হয়নি তার।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেও ইউরোপের কাছে পরাস্ত হতে হয়েছিলো ব্রাজিলকে। তাদের দৌড় থামিয়ে দেয় বেলজিয়াম। ফার্নান্দিনহোর আত্মঘাতি এবং কেভিন ডি ব্রুইনের গোলে ২-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিতে হয় ব্রাজিলকে।
২০০২ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ইউরোপিয়ান দলগুলোর কাছে ব্রাজিলের পরাজয় একপ্রকার নিয়মেই পরিণত হয়েছে বলা যায়। এবার সামনে ক্রোয়েশয়া। সেই ইউরোপের দেশই। এবার কি তবে ঘুচবে আক্ষেপ, ঘুরবে ইতিহাসের চাকা?
অর্থসংবাদ/কেএ