বিএসইসির প্রজ্ঞাপনে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, তাদের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ) বিধিমালা ১৯৯৫-এর দফা ৪-এর ২ উপদফার বিধান পরিপালন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ দফার বিধান অনুসারে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কোনো উদ্যোক্তা, পরিচালক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী, নিরীক্ষক বা নিরীক্ষাকাজে সম্পৃক্ত ব্যক্তি, পরামর্শক বা আইন উপদেষ্টা কিংবা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ১২-তে উল্লিখিত সুবিধাভোগীরা আলোচ্য কোম্পানির বার্ষিক হিসাব শেষ হওয়ার দুই মাস আগে থেকে এ হিসাব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হওয়ার তারিখ পর্যন্ত এ কোম্পানি শেয়ার কেনা-বেচা কিংবা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর বা গ্রহণ করতে পারবে না।
এ বছরের ২৯ জুলাই বিএইসির পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, তাদেরকে ৬০ দিনের মধ্যে ন্যূনতম শেয়ার ধারণের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ন্যূনতম শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছিল কমিশন। মূলত জুন ক্লোজিংয়ের কোম্পানিগুলো উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিএসইসির এ নির্দেশনা পরিপালন করতে হলে সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে শেয়ার কিনতে হতো। এ কারণেই ওই বিধিমালার বিধান পরিপালন থেকে তাদের সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসির তথ্যানুসারে, বর্তমানে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই—এমন কোম্পানির সংখ্যা ৪২টি। এরই মধ্যে কোম্পানিগুলোর কাছে ন্যূনতম শেয়ার ধারণের আল্টিমেটামের বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, এ বছরের ২৯ জুলাই থেকে ১৫ দিনের মধ্যে শেয়ার ধারণের কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দিতে হবে। ৬০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ সম্পন্ন করতে হবে।
এর আগে চলতি বছরের ২ জুলাই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২২টি কোম্পানির ৬১ জন পরিচালককে ৪৫ দিনের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের আল্টিমেটাম দিয়েছিল বিএসইসি। এ সময়ের মধ্যে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় কমিশন। তবে কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালকরা এ নির্দেশনার বাইরে থাকবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা দেয় তত্কালীন কমিশন। কিন্তু কমিশনের এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে কয়েকটি কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা উচ্চ আদালতে রিট করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালত থেকে কমিশনের অনুকূলে রায় আসে।