ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৩১ কোটি ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৬৬ কোটি ১৫ লাখ, আগস্টে ৮৪ কোটি ৪১ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ, অক্টোবরে ১০০ কোটি ৮৮ লাখ, নভেম্বরে ৯৮ কোটি ৫৬ লাখ ও ডিসেম্বরে ৮৪ কোটি ১২ লাখ টাকা।
ওই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী গত ছয় মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৪৪ কোটি ৭৪ লাখ, আগস্টে ৫৫ কোটি ২ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৫৪ কোটি ৬০ লাখ, অক্টোবরে ৪০ কোটি ৯৫ লাখ, নভেম্বরে ৪২ কোটি ৮ লাখ ও ডিসেম্বরে ৩৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৫৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা ঘাটতি। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে এ বন্দরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সবচেয়ে কম রাজস্ব আয় হয়েছে অক্টোবরে। ওই মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪০ দশমিক ৬০ শতাংশ রাজস্ব আয় হয়েছিল। এছাড়া নভেম্বরে ৪৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৪৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ রাজস্ব আয় হয়েছে।
সূত্রটি আরো জানায়, গত অর্থবছরের প্রথমার্ধে এ বন্দরে রাজস্ব আদায় হয় ৩৭৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সে হিসাবেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি।
ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী দিলওয়ার নওশাদ রাজু জানান, ব্যবসায়ীরা আশা করেছিল করোনা সংকট কেটে গেলে হয়তো আমদানি-রফতানি ভালো যাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে একের পর এক সংকট তৈরি হচ্ছে। সর্বশেষ ব্যাংকে এলসি খুলতে না পারার কারণে বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্য খুবই মন্দা যাচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি ক্রমান্বয়ে ভারী হচ্ছে।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের ডেপুটি সহকারী কমিশনার নেয়ামুল হাসান বলেন, বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো না যাওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে ঠিকমতো এলসি খুলতে না পারায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বন্দরের চালিকাশক্তি পণ্য আমদানি-রফতানি, যা গত কয়েক মাসে ব্যাপক কমেছে। এজন্য সরকারের রাজস্বও কমে গিয়ে ঘাটতির পরিমাণ বেড়েছে। তবে আগামী মাসগুলোয় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঘাটতি কমবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভোমরা স্থলবন্দরের জন্য চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করে ১ হাজার ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৭১ কোটি ৯১ লাখ টাকা বেশি। ওই সময় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯৫৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
অর্থসংবাদ/কেএ