চলতি মাসে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রফতানি হয়েছে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১১ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। সে হিসেবে রফতানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, ‘এটা আমরা প্রত্যাশাই করেছিলাম। কারণ কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদিত পণ্যের দামও বেড়েছে। ফলে টাকার অংকটাও বেড়ে গেছে। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ কোটি ডলারের প্লাস্টিক পণ্য রফতানির। তবে এখন মনে হচ্ছে এটি ২২ কোটি ডলার ছাড়াবে। আমরা ২০৩০ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানির আশা করছি। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রফতানি ১০ শতাংশ বেশি হবে।’
জুলাই-মার্চ পর্যন্ত পিভিসি ব্যাগ রফতানি হয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ১ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। সে হিসেবে পণ্যটির রফতানি ৩৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে নয় মাসে প্লাস্টিক বর্জ্য রফতানি হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ১ কোটি ৬৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। অর্থাৎ এক্ষেত্রে রফতানি ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে গেছে।
এর বাইরে অন্যান্য প্লাস্টিক পণ্যের রফতানি ৪৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেড়েছে। নয় মাসে এসব পণ্য রফতানি করা হয়েছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ৮ কোটি ৮ লাখ ডলার।
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল কিছুটা কম। এ বিষয়ে বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক। কোনো মাসে প্রবৃদ্ধি একটু বেশি হবে, কোনো মাসে একটু কম হবে, এটা কোনো বিষয় না। প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় এটি কোনো প্রভাব ফেলছে না।’
বিপিজিএমইএর তথ্য বলছে, দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচ হাজার কারখানায় প্রায় ১৫ ক্যাটাগরিতে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন হয়। এর মধ্যে পোশাক খাতের জন্য পলিব্যাগ, হ্যাঙ্গার, প্লাস্টিক ক্লিপ, বোতাম, খেলনাসামগ্রীর মধ্যে পুতুল, বল, ঘরে ব্যবহার্য চেয়ার, টেবিল, ডাইনিং টেবিল, বিভিন্ন ধরনের রেক, ঝুড়ি, বাথটাব, জগ, মগ, অফিসে ব্যবহার্য পেপারওয়েট, স্কেল, টেবিল, বলপেন, ফাইল কভার অন্যতম। কৃষি খাতের জন্য পাইপ, সাইকেলের যন্ত্রাংশের মধ্যে বাম্পার, হাতলের কভার, ব্যাক লাইট, স্পোক লাইট, মাছ ও ডিম রাখার ঝুড়ি, ভিডিও ও অডিও ক্যাসেট, কম্পিউটারের উপকরণসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্যও দেশে তৈরি হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরে প্লাস্টিক পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ২০ কোটি ডলারের, যা গত অর্থবছর ছিল প্রায় ১৩ কোটি ডলার। সরকারি তথ্য-উপাত্ত বলছে, ২০০৭ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে প্লাস্টিক পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা। প্লাস্টিকের বৈশ্বিক ব্যবহার মাথাপিছু ৫০ কেজি, যুক্তরাষ্ট্রে যা মাথাপিছু ১০৯ কেজি। চীন ও ভারতে যথাক্রমে ৩৮ ও ১১ কেজি। বাংলাদেশে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ৯ কেজি। ফলে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এ বাজারে। অন্যদিকে প্লাস্টিক পণ্যের স্থানীয় চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশই দেশীয় কারখানাগুলো জোগান দিচ্ছে।