এ ব্যাপারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা খুব জরুরি। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক গবেষণা চুল্লি স্থাপন করতে পারলে আমাদের চিকিৎসা ব্যয় কমে আসবে। দেশেই গবেষণা হবে অনেক কঠিন রোগ বা রোগতত্ত্বের।’
সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে তিন মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রিগা মার্ক-২ গবেষণা রি-অ্যাক্টর রয়েছে, যা ১৯৮৬ সালে স্থাপন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল অ্যাটমিকস কম্পানির কাছ থেকে এটি কিনে সাভারের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়। এটি দেশের একমাত্র পারমাণবিক চুল্লি এবং অন্যতম স্থাপনা। পারমাণবিক চুল্লিটি ব্যবহার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এটা খুবই ছোট এবং নিম্ন ক্ষমতাসম্পন্ন। ফলে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক গবেষণা চুল্লি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এসংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক গবেষণা চুল্লি স্থাপনের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এই গবেষণা চুল্লির কাজ হবে দেশের নিউক্লিয়ার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর সহায়তা প্রদান। রেডিও আইসোটোপ উৎপাদন ও গবেষণা কার্যক্রম, যেমন—নিউট্রন অ্যাকটিভেশন অ্যানালাইসিস, নিউট্রন স্ক্যাটারিং, নিউট্রন রেডিওগ্রাফি ইত্যাদির পাশাপাশি নিউক্লিয়ার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরিও সম্ভব হবে এর মাধ্যমে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটি বাস্তবায়িত হবে। আর এটি পরিচালিত হবে পরমাণু শক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে। চলতি বছরের মধ্যে এর একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। এরপর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৮২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৯৬ কোটি টাকা চলতি ২০২০-২১ বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে কভিডের কারণে ছাড় হয়নি এক টাকাও। তাই প্রকল্পের সময় আরো বাড়বে। ফলে ব্যয়ও বাড়বে। চুল্লি স্থাপনের জন্য উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে সাভারে।