সূত্রটি জানায়, গত ২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বব্যাংক সফরকালে ২২৫ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়। যা আঞ্চলিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনার পাঁচটি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে অভিযোজন ও ঝুঁকি কমাতে ৫০ কোটি ডলারের ‘রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিল্ডিং প্রজেক্ট’ রয়েছে, যা ‘ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে প্রথম বড় বিনিয়োগ প্রকল্প। এটি অভ্যন্তরীণ বন্যার বিরুদ্ধে দুর্যোগ প্রস্তুতির উন্নয়নে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবল অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (বিইএসটি) শীর্ষক দ্বিতীয় প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৫ কোটি ডলার। এটি বাংলাদেশে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে এবং সবুজ বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে সহায়তা করবে। এছাড়া ৭৫ কোটি ৩৫ লাখ ডলার ব্যয়ে ‘অ্যাকসেলারেটিং ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেকটিভিটি ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয়া (এসিসিইএসএস) বাংলাদেশ ফেজ-১’ প্রকল্প ঢাকাকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে।
চতুর্থ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫০ কোটি ডলার। ‘ফার্স্ট বাংলাদেশ গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট (জিসিআরডি)’ শীর্ষক প্রকল্প দেশকে সবুজ ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নে সহায়তা করবে। এছাড়া ২৫ কোটি ডলার ব্যয়ে ‘সাসটেইনেবল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ট্রান্সফরমেশন (এসএমএআরটি)’ শীর্ষক পঞ্চম প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্প ক্ষুদ্র শিল্প খাতকে আরও গতিশীল, কম দূষণকারী, দক্ষ এবং জলবায়ু সহনশীল প্রবৃদ্ধির খাতে রূপান্তরে সহায়তা করবে।
এছাড়া সম্প্রতি দুই প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ৮৫৮ মিলিয়ন ডলার বা ৯ হাজার ১৮০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি হয় সরকারের। এর মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলেন্স (পার্টনার)’ প্রকল্পে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা অর্থায়নের চুক্তি হয়। এছাড়া বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পে ৩৫৮ মিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকার অর্থায়ন চুক্তি হয়েছে।
এর আগে গত বছরের (২০২২ সালের) আগস্টে মহামারি করোনার ধাক্কা সামলাতে বাংলাদেশকে ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার চুক্তি করে বিশ্বব্যাংক। করোনা সংকট মোকাবিলায় ‘লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড- ১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি’ প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ খরচ হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের ঋণে ১৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প চলমান আছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে সুদমুক্ত প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ছাড়পত্র প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে এসডিআরে (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) ঋণ গ্রহণ করা হবে। পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে এ ঋণ। এসডিআরে নেওয়া এই ঋণের উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং এক শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। অনুত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে। তবে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরসহ দীর্ঘদিন কমিটমেন্ট ফি মওকুফ করে আসছে।