ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর করের বোঝা বাড়বে

ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর করের বোঝা বাড়বে
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট এবং আয়কর আইন ২০২৩ নিয়ে কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)। সংগঠনটি বলেছে, সংসদে পেশ করা অর্থ বিল এবং নতুন আয়কর আইনের বিলে এমন কিছু প্রস্তাব রয়েছে, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যয় বাড়াবে। এতে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। প্রস্তাবিত আয়কর আইনের বিধানগুলো গভীর ও বিস্তৃত পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। কারণ, এ আইনের কিছু বিধান আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর বিবেচনায় অযৌক্তিক।

বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে ফিকি এক সংবাদ সম্মলেনে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট এবং খসড়া আয়কর আইনের বিষয়ে ফিকি সভাপতি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, সরকার যেসব প্রগতিশীল পরিবর্তন বাস্তবায়নের দিকে নজর দিচ্ছে তা প্রশংসনীয়। তবে কিছু বিধান বাস্তবায়ন হলে ব্যবসা এবং ব্যক্তির প্রবৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের ওপর আরোপিত ভ্যাট এবং লোকসানে থাকা কোম্পানিগুলোর ওপর করের বোঝা বাড়ার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফিকির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপাল আবেইউক্রেমা, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ, ট্যারিফ-ট্যাক্সেশন ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটির কো-অর্ডিনেটর সাজ্জাদ রহিম চৌধুরী, ট্যারিফ-ট্যাক্সেশন ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য দেবব্রত রায় চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির ও কনসালট্যান্ট স্নেহাশিস বড়ুয়া।

সাজ্জাদ রহিম চৌধুরী বলেন, নতুন আয়কর আইন বেশ কিছু ‘খারাপ’ ধারা সংযোজিত হয়েছে। যেগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য তথা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। এই আইনটি কর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই-বাছাই করে সংসদে পাস করা উচিত। নতুবা হিতে বিপরীত হতে পারে।

স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, নির্দিষ্ট খাতে সীমাবদ্ধ না থেকে নতুন খাত বের করতে হবে। নতুন আয়কর আইনে ভাষা কিছুটা সহজবোধ্য করা হয়েছে। তবে ইংরেজি ভার্সন না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিপাকে পড়বেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নতুন আয়কর আইনে ন্যূনতম কর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে কার্বোনেটেড পানীয় বা বেভারেজ শিল্পের ন্যূনতম কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মোট প্রাপ্তির ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কোমল পানীয়ের দাম ৩০ শতাংশেরও বেশি বাড়বে। এ শিল্পের বিকাশের সুযোগ দিতে সরকারকে ন্যূনতম ১ শতাংশ কর ধার্যের অনুরোধ জানিয়েছে ফিকি।

এসময় আরও জানানো হয়, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী প্রণোদনা বোনাস অতিরিক্ত লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি কোম্পানির ওপর আরও করের বোঝা চাপিয়ে দেবে এবং পরবর্তী সময়ে কর্মচারীদের উপার্জনের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যবসায়িক ক্ষতির বিপরীতে অন্য আয় সচল রাখার অনুমতি না দেওয়া করের চেতনার বিরুদ্ধে যায়। পাশাপাশি বিদেশি ঋণের সুদের ওপর করের বিধান এবং তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতার দ্বারা আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ প্রদানে ব্যর্থতার জন্য তার সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক দিতে অননুমোদন দেওয়ার বিধানটি বাদ দেওয়া উচিত।

ফিকি জানায়, কর্পোরেট এবং সংস্থাগুলোর জন্য নগদ লেনদেন সীমিত করা দেশের উন্নয়নকে সীমাবদ্ধ করবে। কারণ, বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি নগদহীন লেনদেন করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। সরকারের উচিত কোম্পানিগুলোর নগদ লেনদেনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ না করে তার খরচের ন্যূনতম শতাংশ ব্যয় করার অনুমতি দেওয়া। যেন পরবর্তী পাঁচ বছরে ধীরে ধীরে তারা শতভাগ নগদহীন লেনদেনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ