বিশ্বে অফিস ভবনের মূল্য কমতে পারে ৮০ হাজার কোটি ডলার

বিশ্বে অফিস ভবনের মূল্য কমতে পারে ৮০ হাজার কোটি ডলার

কর্মজীবীদের মধ্যে রিমোট বা দূর থেকে কাজ করার প্রবণতা বাড়ছে। সংকুচিত হয়ে পড়ছে অফিস স্পেসের প্রয়োজনীয়তা।ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বড় শহরে অফিস স্পেস বাজারে প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার হারানোর ঝুঁকিতে। এমনটাই তথ্য দিয়েছে ম্যাকিনসে অ্যান্ড কোম্পানির নতুন গবেষণা। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।


গ্লোবাল কনসালট্যান্সির প্রতিবেদন অনুসারে, কভিড-১৯ মহামারীতে ঘর থেকে কাজ করার মধ্যে দিয়ে রিমোট কাজের পরিমাণ বেড়েছিল। তবে কভিড-১৯-পরবর্তী সময়ে যদিও অফিসে উপস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল, কিন্তু প্রাক-মহামারী স্তরের ৩০ শতাংশ নিচে রয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে ক্ষতির পরিমাণ ২০১৯ সালে প্রাক-মহামারী স্তরের তুলনায় এক-চতুর্থাংশেরও বেশি।


অফিসের জায়গার চাহিদা সূচক ২০১৯ তুলনায় ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ কম হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে গবেষণায়। বেশির ভাগ শহরে যে পরিমাণ অফিস জায়গার দাবি করা হয়েছে, তা কয়েক দশকের মধ্যে প্রাক-মহামারী স্তরে ফিরে আসবে না।


জরিপটি নয়টি শহরের ওপর করা হয়েছে সেগুলো হলো বেইজিং, হিউস্টন, লন্ডন, নিউইয়র্ক সিটি, প্যারিস, মিউনিখ, সান ফ্রান্সিসকো, সাংহাই ও টোকিও। মূলত দূরবর্তী স্থান থেকে কাজ কেবল অফিসের রিয়েল এস্টেট বাজারকেই প্রভাবিত করেনি, শহুরে জীবনের অন্য দিকগুলোকেও প্রভাবিত করেছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব হলো শহুরে দোকানের কাছে ফুট ট্র্যাফিক কমেছে, ফলে খুচরা ব্যবসার জায়গায় বিশেষ করে অফিস ও বাণিজ্যিক এলাকা খালি হয়েছে ও সঙ্গে ভাড়াও কমেছে। সাধারণ মানুষের খুচরা ব্যয়ের অংশ হিসেবে অনলাইন কেনাকাটার উত্থান এ প্রবণতাকে আরো শক্তিশালী করে তুলেছে।


পরিবর্তনগুলোর প্রতিক্রিয়ায় রিয়েল এস্টেট সেক্টরের বাইরেও প্রসারিত হতে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারগুলো যারা বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট থেকে রাজস্ব আয়ের ওপর ব্যাপক নির্ভরশীল, হঠাৎ করে চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা বাজেট তৈরিতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। ফলে শহরগুলোয় জনসাধারণের পরিষেবা ও অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাহত হতে পারে। ম্যাককিনসে রিপোর্টের ২৪টি দেশের সম্প্রসারিত বৈশ্বিক জরিপে কর্মীরা রিমোট অর্থাৎ দূর থেকে কাজ করার জন্য পথ বেছে নেয়ার বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছে, যার মধ্যে শীর্ষ হলো রিমোট কাজ তাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে, উৎপাদনশীলতা বাড়ায় সর্বোপরি তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে আরো বেশি সময় কাটাতে পারে।


দূরবর্তী স্থান থেকে কাজের দিকে এমন স্থানান্তরের প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। শহর থেকে উপশহরের দিকে চলে যাওয়ায় শহুরে অঞ্চলের ঐতিহ্যগত গতিশীলতাকে ব্যাহত করবে বলে অনেকে ধারণা করছে। হাইব্রিড কাজের এমন মডেল অফিসে কর্মীদের উপস্থিতি আরো কমিয়ে দেবে। উপরন্তু, আরো ভালো কর্মজীবনের ভারসাম্য খুঁজছে— এমন মানুষ শহরের কেন্দ্র থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা শহর থেকে বাইরে যাওয়ার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রমাণ রাখছে।


চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় শহরগুলোকে অভিযোজন প্রক্রিয়ায় এগোতে হবে এবং তাদের ভবিষ্যতের শহুরে ল্যান্ডস্কেপ কেমন হবে তা পুনরায় ভাবতে হবে। খালি অফিস ভবনগুলোয় আবাসিক, বিনোদনমূলক ও সাংস্কৃতিক স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে শহরের কিছুটা নতুন জীবন প্রাণ ফিরে আসতে পারে। প্রযুক্তির মাধ্যমে শহরগুলোকে স্মার্ট শহুরে রূপান্তরিত করা মহামারী-পরবর্তী সময়ে নতুন বাসিন্দা ও ব্যবসা আকৃষ্ট করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট থেকে রাজস্ব আদায়ের সম্ভাব্য ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শহরগুলোর বিকল্প উৎস খোঁজা উচিত। এর মধ্যে অর্থনৈতিক ভিত্তি বৈচিত্র্যময় করার জন্য উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা, প্রযুক্তিনির্ভর হওয়া, পুনর্বীকরণযোগ্য জ্বালানিসহ সৃজনশীল খাতের মতো উদীয়মান শিল্পের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু