হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পরামর্শে সিরিজ চলাকালে প্রথমে একজন স্পোর্টস অস্টিওপ্যাথ এবং পরে একজন স্পোর্টস ফিজিশিয়ানের কাছে পরামর্শ নিয়েছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। স্ক্যানও করানো হয়েছিল তামিমের কোমরের। সেই রিপোর্ট দেখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ জানানো হয়েছিল, স্ক্যানে গুরুতর কিছু ধরা পড়েনি।
তবে বিসিবি চিকিৎসকেরা রিপোর্ট দেখে যেখানে গুরুতর কিছু পাননি, সেখানে একই স্ক্যান রিপোর্ট দেখে লন্ডনের স্পাইন ফিজিশিয়ান টনি হ্যামন্ড নিশ্চিত করেছেন, তামিম ইকবালের মেরুদণ্ডের নিচের দুটি হাড়ের মাঝের ডিস্কে ক্ষয় ধরেছে।
গতকাল ছুটিতে থাকা তামিম দুবাই থেকে লন্ডনে গেছেন চিকিৎসা করাতে। আজ লন্ডনের উদ্দেশে উড়াল দিচ্ছেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। আগামীকাল আরেকটি এমআরআই করাবেন তামিম। পরের দিন লন্ডনের একজন স্পাইন ফিজিশিয়ানের সঙ্গে দেখা করবেন তারা দুজনে। তখন নিশ্চিত হওয়া যাবে, তামিম ইকবালের কোমরের নিচের অংশের চোট সারানোর প্রক্রিয়া।
তামিম ইকবালের এই চোট নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নানা ফিসফাস চলছে ক্রিকেটাঙ্গনে। সে কারণেই কিনা সম্প্রতি টনি হ্যামন্ডের সঙ্গে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যোগাযোগ করেন তামিম। ঢাকা, দুবাই ও লন্ডনকে সংযুক্ত করা ভিডিও কনফারেন্সে তামিম ও বিসিবির চিকিৎসক দলকে হ্যামন্ড জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশ ওপেনারের চোট ফোর্থ ও ফিফথ লাম্বার স্পাইন ভার্টিব্রার (এল-ফাইভ) মাঝের ডিস্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তামিমের এই চোট কতটা ঝুঁকিপূর্ণ? গুগল করলেই মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যায়। এর রোগীদের সুস্থতার মূল শর্ত বিশ্রাম। এমনকি ওঠা-বসা এবং শয্যাগ্রহণের ক্ষেত্রেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সেখানে তামিম ক্যাম্প করেছেন, জিম করেছেন ট্রেনারদের পরামর্শে। সেই জিম করতে গিয়েই নাকি ফের ব্যথা ফেরে তার। অথচ ‘এল-ফাইভ’ রোগীদের পাঁচ পাউন্ড ওজন তোলাও বারণ আছে।
ফলে অনুমান করা যাচ্ছে, তামিমের চোটের গভীরতা আরো বেড়েছে। তাতে বিশ্রাম, চলাফেরায় সতর্কতা আর বেদনানাশক ওষুধে কাজ না-ও হতে পারে। বিসিবি সভাপতি নিজেই গত পরশু ধারণা দিয়েছেন, ইনজেকশন নেওয়া থেকে শুরু করে অস্ত্রোপচার পর্যন্ত গড়াতে পারে তামিমের সুস্থ হয়ে ওঠার ‘ইনিংস’।
মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে অবশ্য ইনজেকশন নিয়েই খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। এই ইনজেকশন নির্দিষ্ট কিছুদিন নিস্তেজ করে রাখে চোটগ্রস্ত জায়গার স্নায়ুকে। তখন আর ব্যথাবোধ হয় না। কিন্তু ওষুধের প্রতিক্রিয়া শেষে আবার ফিরে আসে ব্যথা। এই ইনজেকশন আবার মামুলি সুই ফোটানো নয়, অপারেশন থিয়েটারে অজ্ঞান করিয়ে ইনজেকশন দেওয়া হয় রোগীকে।
ইনজেকশন নিলে ব্যথা থেকে মাস তিনেক রেহাই পেতে পারেন তামিম। কিন্তু অস্ত্রোপচার করাতে হলে একই সময়কাল মাঠ থেকে বাইরে থাকতে হবে তাকে। তাতে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপ দেখতে হবে টিভিতে। এর মধ্যে কোনটি বেছে নেবেন তামিম, জানা যাবে আগামীকাল।