লভ্যাংশ নিয়ে চার্টার্ড লাইফের প্রতারণা

লভ্যাংশ নিয়ে চার্টার্ড লাইফের প্রতারণা
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে লভ্যাংশ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পূর্বে প্রসপেক্টাসে লভ্যাংশের যে প্রস্তাবনা দিয়েছে তার কিছুই রক্ষা করতে পারেনি প্রথম বছরেই। কোম্পানিটি পাঁচ বছরের লভ্যাংশের একটি পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দিয়েছিল। সে হিসেবে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ২০২২ সালের জন্য ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু প্রথম বছরেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে চার্টার্ড লাইফ। ফলে প্রতিষ্ঠানটির এমন কর্মকাণ্ডকে প্রতারণার শামিল বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র মতে, সমাপ্ত হিসাববছরের (২০২২ সাল) জন্য বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও আইপিও আসার পূর্বে কোম্পানিটির প্রসপেক্টাসে যে পরিমাণ লভ্যাংশ দেয়ার পরিকল্পনা উল্লেখ করেছিল তার পাঁচ ভাগের এক ভাগও দিতে পারেনি ২০২২ সালে।

জানা গেছে, গত বছরের (২০২২) ৬ জুলাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮৩০তম সভায় চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে কোম্পানিটি বিএসইসিতে দেওয়া তাদের প্রসপেক্টাসে ৬ বছরের জন্য লভ্যাংশের আকার কেমন হবে তা উল্লেখ করেছিল। তবে তালিকাভুক্তির পরে কোম্পানিটি নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রসপেক্টাস অনুযায়ী, ২০২২ সালে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের জন্য ২ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল। আর বিনিয়োগকারীদের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হবে এমন তথ্য জানিয়েছিল কোম্পানিটি। ২০২৩ সালে উদ্যোক্তাদের জন্য ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ, ২০২৬ সালে ১১ দশমিক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হবে বলে প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করেছিল চার্টার্ড লাইফ। তবে তালিকাভুক্তির প্রথম বছরেই কোম্পানিটি তাদের দেওয়া কথা রাখতে পারেনি।

চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস.এম জিয়াউল হক নিজেদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে অর্থসংবাদকে বলেন, শেয়ারবাজার থেকে আমরা যে পরিমাণ ফান্ড পেয়েছি সেটি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কাজে লাগাতে পারিনি। এছাড়াও আমাদের যে ব্যবসায়িক বাজেট ছিল সেটিও আমরা অর্জন করতে পারিনি। মূলত এই দুই কারণেই লভ্যাংশ কম দেওয়া হয়েছে।

শেয়ারহোল্ডাররা প্রসপেক্টাস দেখেই কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে, এক্ষেত্রে চার্টার্ড লাইফ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যে পরিকল্পনা করেছি তা বাস্তাবয়ন করতে পারিনি, এটি আমাদের ব্যর্থতা।

জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, কোম্পানিটি যদি প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে তবে কেন তা রক্ষা করেনি তার ব্যখ্যা দরকার। এই ব্যখ্যা তলব করতে পারে বিএসইসি এবং ডিএসই।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির ঊর্ধ্বতন একাধিক সূত্র অর্থসংবাদকে জানিয়েছে, প্রসপেক্টাস অনুযায়ী চার্টার্ড লাইফ কেন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি তা সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ খতিয়ে দেখছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, প্রসপেক্টাসে যে ডিভিডেন্ড পলিসি উল্লেখ করেছে, চার্টার্ড লাইফের উচিৎ ছিল সে অনুযায়ী লভ্যাংশ দেয়া। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় যদি লভ্যাংশ কম দেয়, তাহলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। আর যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কম লভ্যাংশ দেয় তাহলে আইন অনুযায়ী বিএসইসি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অর্থসংবাদ/ওয়ালিদ

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত