নতুন আয়কর আইন ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। এর আওতায় একজন করদাতাকে অবশ্যই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে হবে। তা না হলে তাঁর নিজের পক্ষে আর রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ নেই। একমাত্র যদি কর কর্মকর্তা মনে করেন যে তিনি ওই করদাতার রিটার্ন নেবেন, তাহলেই কেবল তিনি ওই করদাতাকে নোটিশ করবেন।
পুরোনো আইনের মতো প্রতিবছর ৩০ নভেম্বর কর দিবস পালিত হবে। সেদিনই ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের সারা বছরের আয়-ব্যয়ের খবর জানিয়ে রিটার্ন দাখিল করার শেষ দিন।
পুরোনো আইন অনুযায়ী, কোনো করদাতা যদি যুক্তিসংগত কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারেন, তাহলে তিনি রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য সময় বাড়ানোর আবেদন করতে পারতেন। কর কর্মকর্তা প্রথমে দুই মাস সময় দিতেন। ওই সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে পারলে আরও দুই মাস সময় বাড়ানোর সুযোগ ছিল। এই সময়ের জন্য করদাতা শুধু ৪ শতাংশ বিলম্ব সুদ দিতেন।
নতুন আইনে আবেদন করার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন না দিলে করদাতা সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
পুরনো আইনে ৭৮ ধারায় বলা ছিল, নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন না দিতে পারলে কিভাবে জরিমানা ও সুদ আরোপ করে রিটার্ন জমা দিতে হবে। নতুন আইনে ওই ৭৮ ধারার কোনো সমান্তরাল বা অনুরূপ ধারা রাখা হয়নি। ফলে, নির্ধারিত সময়ের পরে আর রিটার্ন দেয়া যাবে না। আইনে সেই সুযোগ নেই।
আইনে যেহেতু সুযোগ নেই, তাই একমাত্র কর কর্মকর্তা করাদাতাকে নোটিশ দিলেই রিটার্ন দেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। ১৭২ ধারায় নোটিশ হবে, সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে ১৭৪ ধারা অনুযায়ী রিটার্ন জমা দেবেন করদাতা।
এখন কোনো করদাতা যদি নির্দিষ্ট ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারেন, তাহলে কি বিলম্বে রিটার্ন জমা দেওয়ার কোনো উপায় আছে? নতুন আইন অনুযায়ী উপায় আছে। সেই উপায় হলো, যদি কর কর্মকর্তা মনে করেন যে ওই করদাতাকে রিটার্ন জমা দিতেই হবে, তাহলেই কেবল রিটার্ন দেওয়া যাবে। করদাতা ইচ্ছার ওপর বিষয়টি আর নির্ভর করছে না।
নতুন আয়কর আইনের ১৭২ ধারা অনুযায়ী, রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় পার হওয়ার পর উপ–কর কমিশনারের মতে যদি ওই করদাতার রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা থাকে, তাহলে ওই করদাতাকে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ দেবেন কর কর্মকর্তা। নোটিশ পাওয়ার ২১ দিনের মধ্যে বা কর কর্মকর্তা যে সময়সীমা অনুমোদন করবেন, সেই সময়সীমার মধ্যে রিটার্ন জমা দেবেন ওই করদাতা।