পায়রা বন্দরে আনুষ্ঠানিক পণ্য খালাস কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৬ সালের আগস্টে। তবে বেশি গভীরতার জাহাজ চলাচলের সুবিধার্থে ২০১৯ সালের শুরুতে বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিংয়ের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বেলজিয়ামভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জান ডি নুল এনভির মধ্যে চুক্তি হয়। ব্যয় ধরা হয় ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার ও ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল তৈরি করা হবে। ফলে এ চ্যানেল দিয়ে ৪০ হাজার টন সক্ষমতার জাহাজ পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এরই মধ্যে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে গঠন করা বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের মাধ্যমে (বিআইডিএফ) রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করা হয়েছে। যেটি কিনা এ তহবিল থেকে অর্থায়নকৃত একমাত্র প্রকল্প। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় এ কাজের জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আগামী তিন বছরে সরকারের কাছ থেকে ৫৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার ডলারের ঋণ পাবে। ২ শতাংশ সুদে নেয়া এ ঋণ শোধ করতে হবে সাত বছরের মধ্যে। সুদের অর্ধেক পাবে বিআইডিএফ, বাকিটা সোনালী ব্যাংক। চুক্তির বাধ্যবাধকতা থাকায় চলমান ডলার সংকটের মধ্যেও রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের কাছে এ প্রকল্পের অর্থ পাঠানো হয়। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকটি পরে সেই অর্থে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জান ডি নুল এনভির বিল পরিশোধ করে। এখন পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে ২৬ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার অর্থায়ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ আমদানির চাপে পড়ে দেশ। এরপর থেকেই শুরু হয় রিজার্ভের ক্ষয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৮৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ আগস্ট তা নেমে এসেছে ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলারে। তবে আইএমএফের বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুসারে বর্তমানে এ রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৩২৬ কোটি ২ লাখ ডলার। এ পদ্ধতিতে হিসাবের সময় পায়রা বন্দরসহ আরো বেশ কিছু সংস্থা ও তহবিলে দেয়া অর্থ বাদ দেয়া হয়েছে রিজার্ভ থেকে।
অর্থসংবাদ/এমআই