সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপক উপস্থিতি কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমারের জনগণের দীর্ঘ সময়ের উপস্থিতির কারণে এখানে সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় জাপানের সহযোগিতার জন্য তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের সময় জাপানের সমর্থনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশে (পাকিস্তানের বন্দি দশা থেকে) ফিরে আসেন। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশকে স্বাধীন করা এবং সাধারণ জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে জাপানের সংশ্লিষ্টতার জন্যও প্রধানমন্ত্রী জাপানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্তত ৩১০টি জাপানি কোম্পানি দেশে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের বড় বড় প্রকল্প তারা বাস্তবায়ন করছে। জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘ ও বড় উন্নয়ন সহযোগী বাংলাদেশ।
ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গাজীপুরে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। জাপানের উদ্যোক্তারা সেখানে নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে পারেন। ২০২২ সালে জাপান ও বাংলাদেশ নিজেদের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশকে বিনিয়োগের উৎকৃষ্ট গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে তার (শেখ হাসিনার) গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি (অ্যাবে) দুই দেশের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে চান। আমরা আশা করি, দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সহযোগিতার মাত্রা আরও বাড়বে।
বৈঠকে জাপানের রাষ্ট্রদূত দুই দেশের রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্যদের সফর বিনিময়ের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রদূত ইতো এ সময় গত ১০ জানুয়ারি থেকে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণগণনার অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এটি একটি অবিস্মরণীয় ইভেন্ট।
জাপানের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময় হলি আর্টিজান বেকারির ভিকটিমদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্যও তাকে (প্রধানমন্ত্রী) ধন্যবাদ জানান। বাসস।