গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদারকি কমিটি বিএমবিএর সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় বিএমবিএর প্রতিনিধি দল পুঁজিবাজারের বিষয়ে তাদের মতামত কমিটির কাছে তুলে ধরে। সংগঠনটি পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট নিরসনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের তহবিল জোগানের দাবি জানায়। গতকালের বৈঠকে বিএমবিএর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহেল রহমান, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান ও সেক্রেটারি জেনারেল মো. রিয়াদ মতিন। এ সময় তদারকি কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সমন্বয়ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাকসুরা নূর, কমিটির সদস্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক ও উপমহাব্যবস্থাপক, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেন এবং কমিটির সদস্য সচিব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব ড. নাহিদ হোসেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদারকি কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএমবিএর প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, আমরা কমিটির কাছে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছি। আমাদের প্রস্তাবের মূল বিষয় হচ্ছে পুঁজিবাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়ানো, যাতে এটি দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল হয়। আর আমরা আইপিওর সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে বলেছি। তবে অবশ্যই সেগুলো ভালো ও মানসম্পন্ন আইপিও হতে হবে। তাছাড়া বাজারে যাতে পর্যাপ্ত শেয়ারের সরবরাহ থাকে এবং অস্বাভাবিক দর না বাড়ে, সেজন্য আমরা আইপিওর শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই লক ফ্রি করার প্রস্তাব দিয়েছি। কমিটি আমাদের প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে জানিয়েছে, তারা নিজেরা এ বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে পাঠাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে পুঁজিবাজার সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তারা কমিটিতে পুঁজিবাজারের সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবহিত করতে পেরেছেন। বর্তমানে ১৫-১৬ হাজার কোটি টাকা নেগেটিভ ইকুইটি রয়েছে—বিষয়টি তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, যদি এটি সমন্বয় করতে হয়, তাহলে যেন কোনো করারোপ করা না হয়। তাছাড়া শুধু বিএসইসির একক উদ্যোগে পুঁজিবাজারকে ভালো করা সম্ভব নয়। এখানে অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট ইস্যুও রয়েছে। যেমন করসংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সহায়তা লাগবে। আবার কোম্পানির কিছু ইস্যু রয়েছে, যেগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে সমাধান করতে হলে আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যায়ে বৈঠক করে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার বিষয় রয়েছে। ফলে রাতারাতি পুঁজিবাজারের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে এমন নয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কমিটি বিএমবিএর সঙ্গে তাদের প্রথম বৈঠক করেছে। আজ আবার তারা নিজেরা বৈঠক করবে। সামনে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও ব্রোকারদের সঙ্গেও আলোচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তাছাড়া সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সার্বিক ও সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগলেও ভালো কিছুর বিষয়ে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।