দ্য গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, গত সপ্তাহে শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় অ্যাপলের বাজার মূলধন কমেছে ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ডলার। এ ক্ষেত্রেও কাজ করেছে ভূরাজনীতি। চীন–যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতির কারণে চীনের বাজারে আইফোনের বিক্রি কমে যেতে পারে—এ আশঙ্কায় অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমে যায়। বিশ্বে অ্যাপলের যত ফোন বিক্রি হয়, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগই চীনে বিক্রি হয়।
এদিকে চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মার্কিন ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞার আওতা ধীরে ধীরে বাড়ানো হচ্ছে। ফলে সামগ্রিকভাবে চীনের বাজারে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়ছে; এ ছাড়া চীনের নাগরিকদের হুয়াওয়ের মতো স্থানীয় ফোন কিনতে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যারা সম্প্রতি নতুন ফোন এনে বাজার মাত করে দিয়েছে।
অ্যাপলের মোট আয়ের ৬০ শতাংশ আসে আইফোন বিক্রি করে। কিন্তু গত আট ত্রৈমাসিকে আইফোনের বিক্রি ও অন্যান্য গেজেটের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কমে যাওয়ার কারণে অ্যাপল ইনকরপোরেশনের বাজার মূলধন কমে যায়। বর্তমানে আইফোনের বাজারমূল্য তিন ট্রিলিয়ন বা তিন লাখ কোটি মার্কিন ডলারের নিচে।
আরও পড়ুন: চীনে আইফোন নিষিদ্ধের পর অ্যাপলের শেয়ারে পতন
বাজারে চাহিদা কমছে অ্যাপলের। আইফোনের কম চাহিদার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন বিশ্লেষকেরা। এ ছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং সে কারণে মুঠোফোন বদলানোর প্রবণতা হ্রাস ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের প্রতি মানুষের নিরাসক্তির কারণেও আইফোন বিক্রি কমে গেছে।
এ পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাপন বার্তায় অ্যাপল এমন কিছু কথা বলছে, যা সাধারণত তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়। সেটা হলো, চার্জিং ব্যবস্থায় পরিবর্তন, যার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের লাইটনিং কানেক্টর থেকে সর্বজনীন ইউএসবি-সি ধরনে যাবে আইফোন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন নিয়মানুসারে, সে অঞ্চলে যত ধরনের গেজেট বিক্রি হবে, তাতে এই ইউএসবি-সি ধরনের কানেক্টর থাকতে হবে। পরিবর্তন হিসেবে এটি ছোট, কিন্তু এর প্রভাব ব্যাপক হবে বলেটি মনে করছে দ্য গার্ডিয়ান। মূলত, পরিবেশের কথা চিন্তা করে, অর্থাৎ ই-বর্জ্য উৎপাদন হ্রাসের কথা চিন্তা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে এক চার্জার দিয়ে সব ধরনের ফোন চার্জ করা যায়।
প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে নতুন পণ্যের বাজারজাত করে অ্যাপল। এবারও ১২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারটিনোর অ্যাপল পার্কে নতুন পণ্য ও প্রযুক্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানটি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো দাওয়াতপত্রে এই অনুষ্ঠানের একটি বাহারি নামও দিয়েছে অ্যাপল—‘ওয়ান্ডারলাস্ট’। অনুষ্ঠানে আসতে যাওয়া নতুন প্রযুক্তি ও পণ্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
অর্থসংবাদ/এমআই