গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি নিয়ে ব্রোকারেজ উদ্যোক্তাদের দুষছেন সংশ্লিষ্টরা

গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি নিয়ে ব্রোকারেজ উদ্যোক্তাদের দুষছেন সংশ্লিষ্টরা
ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মাধ্যমে শেয়ার লেনদেন করেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। তবে দেশের বেশকিছু ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এসব ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে বিপুল পরিমাণ ঘাটতি ছিল। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেন বন্ধও করেছে। তবে এখনো বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি রয়েছে বলে জানা গেছে। বেশকিছু ব্রোকারেজ হাউজের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগকারীদের অর্থ তুলে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে ডিএসইর মনিটরিং অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ থেকে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি খুঁজে পেয়েছে সংস্থাটি।

জানা গেছে, সম্প্রতি ইমতিয়াজ হুসাইন সিকিউরিটিজের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি পাওয়া গেছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক হিসাবে ২২ লাখ ৫৪ হাজার টাকার ঘাটতি খুঁজে পায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। গত ৩ আগস্ট এএল সিকিউরিটিজের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি ছিল ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। একই দিন আল-মুনতাহা ট্রেডিং কোম্পানির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ১ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার টাকার ঘাটতি ছিল। চলতি বছরের ৩ এপ্রিল অ্যাঙ্কর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের গ্রাহক হিসাবে ১ কোটি ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ঘাটতি ছিল। অ্যাঙ্কর সিকিউরিটিজকে দেওয়া এক চিঠিতে ডিএসই জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটিতে ন্যূনতম এক বছর বিশেষ তদারকি করবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাব মাসে অন্তত দুইবার পরীক্ষা করবে ডিএসই।

গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকার বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলো বিভিন্ন ধরণের তথ্য জানিয়েছে। অ্যাঙ্কর সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সাইফুল ইসলাম ওয়াদুদ অর্থসংবাদকে বলেছিলেন, যে টাকার গরমিল ডিএসই পেয়েছে সেটি আমাদের অন্য একটি অ্যাকাউন্টে জমা ছিল। গ্রাহকদের ডিপি একাউন্টের মুনাফার টাকা ছিল, এ অর্থ বিতরণের সফটওয়্যার আমাদের নেই। আমাদের কারেন্ট একাউন্ট না থাকায় অন্য একাউন্টে রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ইমতিয়াজ হুসাইন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ তৌকির হোসাইন অর্থসংবাদকে বলেন, অনেক সময় আমাদের গ্রাহকরা যে চেক দেয়, সেটি বাউন্স হয়। ফলে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি দেখা দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, বিও হিসাবে ঘাটতির কারণে কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো যেসব ব্রোকারেজ হাউজে ঘাটতি রয়েছে, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত অথবা এসব প্রতিষ্ঠানের বাধ্যতামূলক ব্যাংক গ্যারান্টি রাখতে হবে। বিশেষ করে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউজগুলোর জন্য এ আদেশ জারি করা উচিত। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জ তো এটি করছে না। যদি ব্যাংক গ্যারান্টি থাকতো তাহলে বানকো সিকিউরিটিজসহ অন্যান্য ব্রোকারেজ হাউজগুলো বন্ধ হতো না।

তিনি বলেন, এসব ব্রোকারেজ হাউজের মালিকরা গ্রাহকদের অর্থ তুলে নেয়। এরা বিনিয়োগকারীদের অর্থকে নিজেদের অর্থ মনে করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মূলধন কম, তাই এ ধরণের ঘটনা ঘটছে। ব্যাংক গ্যারান্টি বা ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ থাকলে এ ধরণের ঘটনা ঘটতো না। এদের মূলধন কম বলে তাঁরা গ্রাহকদের অর্থ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্টক এক্সচেঞ্জ এসব ঘটনা উদঘাটন করে। তবে এতে আসলে লাভ হয় না। বানকো সিকিউরিটিজে এখনো বিনিয়োগকারীরা ঘুরছে কিন্তু তাদের টাকা পাচ্ছে না।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত