আগস্টে ওপেক প্লাসের গড় উত্তোলন ছিল দৈনিক ৪ কোটি ৫ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল। এর মধ্যে ওপেকের ১৩ সদস্যদেশ দৈনিক উত্তোলন করেছে ১ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল। ওপেক প্লাসের নন-ওপেক দেশগুলোয় উত্তোলনের পরিমাণ দৈনিক ৭০ হাজার ব্যারেল করে কমেছে।
নিট উত্তোলন বাড়লেও জোটের উত্তোলনের পরিমাণ চলতি গ্রীষ্মের শুরুর দিকের তুলনায় এখনো অনেক কম। কারণ জুলাই থেকে সৌদি আরব এককভাবে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন কমাচ্ছে। উদ্দেশ্য বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো।
সমীক্ষার তথ্য বলছে, আগস্টে সৌদি আরবের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনের পরিমাণ ছিল দৈনিক ৮৯ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল, যা আগের মাসের থেকে দৈনিক এক লাখ ব্যারেল কম এবং ২০২১ সালের মে মাসের পর সর্বনিম্ন।
ওপেক প্লাসের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল উত্তোলক দেশ রাশিয়া। আগস্টে দেশটি দৈনিক উত্তোলনের পরিমাণ ২০ হাজার ব্যারেল করে কমিয়ে দৈনিক ৯৪ লাখ ব্যারেলে নামিয়েছে। জুলাইয়ে রাশিয়া দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল করে সরবরাহ কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল। তবে সেপ্টেম্বর থেকে সরবরাহ দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল করে কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়।
মে মাস থেকে ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলোর উত্তোলন কমানোর তালিকায় শীর্ষে ছিল সৌদি আরব। গত ১০ মাসের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চে ওঠার জন্য সৌদির উত্তোলন কমানোকে বড় অংশে দায়ী করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
৫ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব ও রাশিয়া ঘোষণা করে, তারা ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত জ্বালানি তেল সরবরাহ কমানো অব্যাহত রাখবে। এসএন্ডপি গ্লোবালের বিশ্লেষকদের প্রক্কলন বলছে, এতে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দৈনিক ১৮ লাখ সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেবে।
সমীক্ষায় বলা হয়, আগস্টে ইরানের দৈনিক উত্তোলন ২৯ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে, যা ২০১৮ সালের নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ। মূলত চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি বাড়ায় এ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ইরানের ওপর থেকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাও অঘোষিতভাবে কিছুটা শিথিল হওয়ায় ক্রেতা দেশগুলো পারস্য থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি ওপেক প্লাস জোটের উত্তোলন কমানোর চুক্তি থেকেও মুক্ত ছিল ইরান। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ায় ইরাকে দৈনিক উত্তোলন বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল করে। একই সময়ে নাইজেরিয়ায় দৈনিক উত্তোলন বেড়েছে ৬০ হাজার ব্যারেল করে।
চলতি বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস বাড়িয়েছে ওপেক। অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও আগামী বছরের চাহিদা নিয়ে আশাবাদী জোটটি। কারণ চীন ও ভারত অব্যাহত জ্বালানির ব্যবহার বাড়াচ্ছে।
মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। আগামী বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে দৈনিক ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে।
অর্থসংবাদ/এমআই