বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ‘ক্যাপিটাল মার্কেট ফর সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স’ শীর্ষক এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য অনুষদ ভবনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সেমিনারে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। জিডিপিতে এগিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের প্রতি সবার আগ্রহের পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা, সম্পর্কের উন্নতি করা, পার্টনারশিপ বাড়ানো এবং বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের উন্নত দেশগুলো তাকিয়ে আছে।
তিনি বলেন, সামনের পাঁচ বছর হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বর্ণযুগ। করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে মাঝে অর্থনীতিতে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। এখন নির্বাচনের জন্য একটা টেনশন আছে মানুষের। তারপরও সুন্দর অর্থনৈতিক ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছি।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে গার্মেন্টস শিল্পে ৪২ শতাংশ শ্রমিকের সংকট রয়েছে। ধান কাটার লোক নেই। বরং যে অর্থনৈতিক অবস্থা দেখতে পাচ্ছি, তাতে সামনে আমাদের কর্মদক্ষ লোকেরই অভাব হবে। সুতরাং এখন আমাদের বিনিয়োগে মনোযোগী হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কখনো কোন ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি। সামনে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এসডিজি, ২০৪১ সাল এবং ডেল্টা প্ল্যান। এগুলোতেও আমরা ব্যর্থ হতে চাই না। কিন্তু এর জন্য আমাদের ৯৬৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। আমাদের নিজেদের রিসোর্স থেকেই এ অর্থ জোগাড় করা কঠিন। এজন্য মানি মার্কেট এবং ক্যাপিটাল মার্কেটকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের দেশীয় বিনিয়োগ হয়তো ৪৫০ বিলিয়ন ডলার হবে। বাকি বিনিয়োগ বিদেশ থেকে আনতে হবে। তাই আমাদের এখন দেশি বিদেশি বিনিয়োগ দরকার।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান বলেন, গত কয়েকবছর যে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হচ্ছে, দেশে বিনিয়োগ করলে যে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায় এসব আমরা বিনিয়োগ সপ্তাহ উপলক্ষে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা চাই দেশি বিনিয়োগকারীরা আরও বিনিয়োগ করুক। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও জানুক। তাঁরা যদি জানতে পারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে ভালো রিটার্ন পাওয়া যায়, তাহলে তাঁরা বাংলাদেশেই বিনিয়োগ করবে।
তিনি বলেন, আফ্রিকার দেড়শো কোটি মানুষের বিশাল বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের অনেক জমি পড়ে আছে। তাঁরা এগ্রোবেইজ ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদেরকে তাদের সঙ্গে থাকতে বলেন। বাংলাদেশের উন্নয়নের যে উদাহরণ সেটি তাঁরা কপি করতে চায়। আফ্রিকার সাথে শিগগিরই আমাদের বাণিজ্য-বিনিয়োগ হবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, গ্রিন বন্ড, ব্লু বন্ড এবং ইসলামিক সুকুক বন্ডের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সহজেই ক্যাপিটাল রেইজ করার বিষয়ে আমরা কাজ করছি। অলরেডি বন্ডের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্যে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়ে গিয়েছে। সামনে এটি আরও বাড়তে থাকবে।
সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাছান বাবু, বিএমবিএর প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ মতিন প্রমূখ।