ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের রজতজয়ন্তী ও প্রথম অ্যালামনাই পুনর্মিলনী আনন্দ উৎসব মুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের থেকে আনন্দ র্যালি আরম্ভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে সমাবেত হয়। এতে সাবেক ও বর্তমান প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীবৃন্দ আনন্দঘন মুহূর্তে মেতে উঠে।
আলোচনা সভায় ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রেজওয়ানুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানের অ্যালামনাই কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. বাবলী সাবিনা আজহার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সভাপতি অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, আমরা এমন একটি বিভাগে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছি, যা সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিভাগে আমরা বিজ্ঞানের দুইটি অংশ একটি হলো পুষ্টি এবং অন্যটি খাদ্য প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করি। দুটো বৃহত্তম বিজ্ঞানের অংশকে আমরা একত্রে পাঠদান করছি। এর মধ্যে আমাদের অনেক কিছুর স্বল্পতা রয়েছে যেমন- ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি সহ অনেক ধরনের সল্পতা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিভাগের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে যদি আমাদের রিমাইন্ড করেন, আমরা সেগুলো ইম্প্রুভ করার চেষ্টা করবো। আমরা যদি আপনাদের কাছ থেকে কো-অপারেশন পাই, তাইলে আমাদের সাথে সমন্বয় করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে অগ্রসর হবো।
এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আজ থেকে ২৫ বছর আগে যখন নতুন বিভাগটি চালু করা হয় তখন আমরা ১২/১৩ জন শিক্ষক মিলে ৩টি বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলাম। আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ছিল না। সে যুগে শিক্ষার্থীদের হাতে কিছুই ছিল না তবুও তারা যদি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তবে আপনারা আজ কেন পারবেন না। তাই বর্তমানে যারা আছেন তাদের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞান ভবনের বিভাগসমূহের যে শিক্ষকরা আছেন, তাদের শিক্ষার্থীদের ল্যাবে প্রবেশ করাতে হবে, আমাদের যে ইকুইপমেন্ট আছে সেগুলো যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। তবেই আমরা ল্যাব গুলো ২৪ ঘন্টা গবেষণায় নিয়োজিত রাখতে পারব এবং দেশব্যাপী যে নিরাপদ খাদ্য অভিযান চলছে, আমি মনে নিজের ঘর অর্থাৎ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এর যাত্রা শুরু হওয়া উচিত। আমাদের যে কেন্দ্রীয় গবেষণাগার আছে, তা আমরা আজকের এই অ্যালামনাইদের মাধ্যমে কাজে লাগাতে চাই।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আপনারা এখানে বড় হয়েছেন এবং মানুষ হয়েছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋণ পরিশোধ করার জন্য এসময় আপনাদের অঙ্গীকার করতে হবে। বিভাগে কোনো শিক্ষার্থী অর্থের অভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে ঝরে না পড়ে সেই দিকটা বিবেচনা করে অ্যালামনাই স্কলারশিপ চালু করেন। রজতজয়ন্তী উপলক্ষে টেকনোলজি স্থাপন করুন। কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন যাতে অ্যালামনাই ফলপ্রসূ হয়। সেইসঙ্গে আমাদেরকে পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে বিভাগটির প্রয়াত জীববিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক ড. মো. রেজওয়ানুল করিম ও অধ্যাপক ড. মো. নজিবুর রহমানসহ সকল প্রয়াত ছাত্রছাত্রীদের স্বরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ করেন সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে বিভাগের তথ্য চিত্র প্রদর্শন, ফটোসেশন, সাংগঠনিক সভা ও এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউট্রি বাইটের সৌজন্যে বিভাগটির আয়োজনে পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম