মিয়া আব্দুল মতিনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী টনকী গ্রামে। তার বাবার নাম মুত হাসিম ভূঁইয়া। তারা চার ভাই ও এক বোন ছিলেন। আর তার মধ্যে মিয়া আব্দুল মতিন ছিলেন সবার বড়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও ৫ মেয়ে রেখে গেছেন।
আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য আটজনের মিছিলে আব্দুল মতিন নেতৃত্ব দেন। সেই মিছিলটি আখাউড়া উপজেলার মোগড়া বাজার ও গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। ‘উর্দু ভাষায় লাথি মার, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চালু কর’, ‘রাষ্ট্রভাষা চাই’, ‘আমাদের ভাষা বাংলা ভাষা’ এমন প্লেকার্ড হাতে নিয়ে মিছিলটি এগিয়ে যেতে থাকে। সে সময় ওই মিছিলে বিদ্যালয়ের ৮০০-এর মতো শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের জন্য মিয়া আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে শুরু করা আন্দোলনটি গণবিক্ষোভে রূপ নেয়। আর সেই বিষয়টি জেনে যায় তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার। নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। টানা দুই মাস কারাভোগ শেষে জেল থেকে তিনি ছাড়া পান।
১৯৫৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা সৈনিক মিয়া মতিনসহ আরও কয়েকজনকে ঢাকায় ডেকে পাঠান এবং সাহসিকতার জন্য তাদের উপহার দেন।