তিনি বলেন, আপিল বিভাগে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত শুনানি হওয়ার আশা করছেন তারা।
গত ২৪ নভেম্বর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার নিরীক্ষা দাবির নোটিসের উপর হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখে গ্রামীণফোনকে অবিলম্বে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
বিটিআরসি বলে আসছে, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার পাশাপাশি রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের।
কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে বিটিআরসি লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে দুই অপারেটরকে নোটিস পাঠায়।
বিটিআরসি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় দুই অপারেটর আদালতের দ্বারস্থ হয়। পরে অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হলেও তাতে সফলতা আসেনি।
গ্রামীণফোনের আবেদনে গত ১৭ অক্টোবর বিটিআরসির নিরীক্ষা আপত্তি দাবির নোটিসের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয় হাই কোর্ট। বিটিআরসি লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ ২৪ নভেম্বর গ্রামীণ ফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশ দেয়।
গ্রামীণফোন কর্মকর্তা হোসেন সাদাত বলেন, “গত ২৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের সার্টিফায়েড কপি পেয়েছি আমরা। রিভিউ করতে হয় ৩০ দিনের মধ্যে। সেটা আমরা আজকে দাখিল করেছি।”
আদালত দুই হাজার কোটি টাকা দিতে বললেও গ্রামীণফোন কেন ৫৭৫ কোটি টাকা দিতে রাজি হল- সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, নিরীক্ষা আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটির মধ্যে বিটিআরসির দাবি ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে মূল হচ্ছে ২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা এবং বাকি ৬ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা সুদ। এর বাইরে ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা পাবে এনবিআর।
”ভ্যাট বা ট্যাক্সের মামলায় প্রাথমিকভাবে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হয়। আমরাও মূল ২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫৭৫ কোটি পরিশোধের কথা বলেছি রিভিউ পিটিশনে।”
এই টাকা একসঙ্গে না দিয়ে ১২টি কিস্তিতে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে হোসেন সাদাত বলেন, “সমান সংখ্যক অঙ্কে ১২ কিস্তিতে এই টাকা দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে রিভিউ পিটিশনে।”
তিনি বলেন, আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী টাকা পরিশোধের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় ছিল তাদের। আগেই যেন বিষয়টির একটি সুরাহা হয়, সেজন্য তারা আগেই আবেদন করেছেন।
’নোটিসের জবাব পায়নি টেলিনর’
নিরীক্ষা আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার বিষয়ে ‘সালিশে’ (আর্বিট্রেশন) যাওয়ার জন্য গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিস পাঠিয়েছে গ্রামীণফোনের মালিক কোম্পানি টেলিনর।
অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারের পক্ষে সেই নোটিসের জবাব দিয়েছেন বলে গত ২ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক।
তবে এখনো পর্যন্ত টেলিনর সেই জবাব পায়নি বলে রোববার সাংবাদিকদের জানান গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা হোসেন সাদাত।
তিনি বলেন, ”সংবাদমাধ্যমে আমরা জেনেছি, সরকার একটা জবাব পাঠিয়েছে। আমাদের প্যারেন্ট কোম্পানি এখনো কোনো ধরনের জবাব বা চিঠি পায়নি।”