পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। 'কভিড-১৯ বাংলাদেশ জীবিকার ওপর অভিঘাতের ধারণা জরিপ-২০২০' নামে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। জরিপের বিস্তারিত তুলে ধরেন বিবিএস সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন। মঙ্গলবার একনেক বৈঠক শেষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
টেলিফোনে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এ ধরনের ধারণা জরিপ বিবিএসের ইতিহাসে এবারই প্রথম। জরিপের জন্য মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো থেকে দুই হাজার পরিবারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে রিকশাচালক থেকে ডাক্তার, প্রকৌশলীসহ সব শ্রেণির পেশাজীবীকে দৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন করা হয়। এর মধ্যে ৯৮৯ জন তাদের তথ্য দিয়েছেন। গত ১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর- এই সাত দিনে জরিপ পরিচালনা করা হয়।
খানাভিত্তিক মাসিক আয় প্রসঙ্গে জরিপের ফলে দেখা যায়, কভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগে গত মার্চে পরিবারপ্রতি আয় ছিল ১৯ হাজার ৪২৫ টাকা। গেল আগস্টে সেটি কমে হয়েছে ১৫ হাজার ৪৯২ টাকা। অর্থাৎ কভিডে মাসিক আয় কমেছে পাঁচ হাজার টাকার মতো। ব্যয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, মার্চে ছিল ১৫ হাজার ৪০৩ টাকা। আগস্টে তা নেমে এসেছে ১৪ হাজার ১১৯ টাকায়। অর্থাৎ ব্যয় কম হয়েছে এক হাজার ৩০০ টাকার মতো। এ কারণে ৬৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ সমস্যায় পড়েছে।
আয় এবং ব্যয়ের ব্যবধান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মানুষ হয়তো খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিয়েছে বা কোনোভাবে সমন্বয় করেছে।
জরিপে দেখা যায়, কভিড-কালে ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ পরিবার সরকারের দেওয়া বিভিন্ন সহায়তা পেয়েছে। সহায়তাপ্রাপ্ত পরিবারের মাসিক আয় ২০ হাজার টাকার নিচে। বেকারের হার মার্চে ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। জুলাইয়ে তা বেড়ে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশে পৌঁছায়। সেপ্টেম্বরে বেকারত্বের হার ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীদের সংখ্যাও আবার আগের অবস্থানে পৌঁছেছে। দিনমজুরের সংখ্যা মার্চের তুলনায় ৮ থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ হয়েছে। কভিডে কৃষিতে কোনো প্রভাব পড়েনি।
সারাদেশে চার কোটি পরিবারের মধ্যে মাত্র ৯৮৯ পরিবারের তথ্য দিয়ে তৈরি করা জরিপে জাতীয় চিত্র প্রতিফলিত হলো কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে বিবিএস সচিব বলেন, সংখ্যায় হার কম মনে হতে পারে। তবে জরিপের সূত্র অনুযায়ী ধারণা, জরিপের ক্ষেত্রে ৮০০ প্রতিনিধিত্বই পরিপূর্ণ জরিপের জন্য যথেষ্ট। সে হিসেবে ৯৮৯ পরিবার কোনোভাবেই কম নয়।