তারল্য সংকটের প্রভাবে ট্রেজারি বিলের সুদহার এক যুগ পর দুই অঙ্ক ছাড়িয়েছে। আবার ‘স্মার্ট’ বা ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহারের সঙ্গে মার্জিনও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে চলতি ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকগুলো ঋণে সর্বোচ্চ সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত নভেম্বরে সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ঋণের পাশাপাশি আমানতের সুদও বাড়ছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আইএমএফের ঋণের শর্ত পরিপালনের জন্য গত জুলাই মাসে সুদহারের নতুন ব্যবস্থা চালু হয়। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত জুন পর্যন্ত ঋণের সুদহারে সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯ শতাংশ। নতুন ব্যবস্থায় ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদহার তথা সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিলের (স্মার্ট) সঙ্গে একটি মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হয়। সম্প্রতি মার্জিন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগে যা ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল।
গত জুলাই মাসে ‘স্মার্ট’ ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো ৩ শতাংশ যোগ করে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১০ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন নীতির ফলে প্রতি মাসে ‘স্মার্ট’ বাড়ছে। পাশাপাশি মার্জিনের হারও বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত অক্টোবরে মার্জিনের হার সাড়ে ৩ শতাংশ করা হয়। গত ২৭ নভেম্বর মার্জিন বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়। নভেম্বর মাসে স্মার্ট দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। এতে করে ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। তবে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি এবং কৃষিঋণে সুদহার হবে ১ শতাংশ কম। এসএমইতে সাধারণ ঋণের অতিরিক্ত ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিতি রেপোর সুদহার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ গত ২৬ নভেম্বর ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। আবার স্পেশাল রেপোর সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ নিয়ে চলতি বছর রেপো ও স্পেশাল রেপোর সুদহার ২ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। আবার সরকারের ঋণ চাহিদার পুরোটাই এখন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে ঋণের বেশির ভাগই সরবরাহ করছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে টাকা উঠে আসা অব্যাহত আছে। সব মিলিয়ে বাজারে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে।