এর আগে রিজার্ভ সংকটে পড়া বাংলাদেশকে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় আইএমএফের পর্ষদ। সাত কিস্তিতে ৪২ মাসে এ ঋণ পাওয়ার কথা রয়েছে। ঋণের গড় সুদের হার ২ দশমিক ২ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বুঝে পেয়েছে বাংলাদেশ। গোটা প্যাকেজে দুই ধরনের ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা বা বর্ধিত তহবিল (ইসিএফ অ্যান্ড ইএফএফ) থেকে পাওয়া যাবে ৩৩০ কোটি ডলার। রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় পাওয়া যাবে ১৪০ কোটি ডলার।
২০২৬ সাল পর্যন্ত এ ঋণ কর্মসূচি চলাকালীন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের শর্ত পরিপালন ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ডলার ছাড়ের বিষয়ে মঙ্গলবার আইএমএফের পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আইএমএফের শর্তে গত জুনের মধ্যে কর-জিডিপির অনুপাত দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, বিপিএম৬ অনুসারে রিজার্ভের হিসাবায়ন, বাজারভিত্তিক বৈদেশিক মুদ্রার দর নির্ধারণ, ব্যাংকের পাইলট রিস্কভিত্তিক নজরদারির কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের তথ্য প্রকাশের কথা বলা হয়েছিল। এছাড়া জুলাইয়ের মধ্যে সুদহারে করিডোর পদ্ধতি গ্রহণেরও শর্ত দিয়েছিল সংস্থাটি।
শর্ত ছিল সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন ও ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের খসড়া জমা দেয়ারও। এছাড়া সেপ্টেম্বর শেষে জলবায়ু ও সবুজ উদ্যোগকে সংহত করতে টেকসই সরকারি কেনাকাটার নীতি গ্রহণ ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের শর্ত ছিল। ঋণ কর্মসূচিতে চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে জ্বালানি পণ্যের দাম সমন্বয়ে সময়ভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি নির্ধারণেরও শর্ত দেয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণ অনুমোদন করা হয় গত জানুয়ারিতে। সে সময় বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট বেসিসে ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, যা গত নভেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। জানুয়ারিতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার, যা গত নভেম্বর শেষে কমে ২৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
অবশ্য আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুসারে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন আরো কম। গত ৬ ডিসেম্বর বিপিএম৬ অনুসারে বাংলাদেশের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাংলাদেশের নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ বা (এনআইআর) সংরক্ষণেরও শর্ত রয়েছে। এ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো হওয়ার কথা।
অর্থসংবাদ/এমআই