কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক আদেশে জানিয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক ‘ঋণনিয়মাচার ও বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন প্রদান করা, পর্ষদ কর্তৃক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ করা, পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের শেয়ার একই পরিবারে কেন্দ্রীভূত করা, পরিচালক নির্বাচন বা পুনর্নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি, পর্ষদের গোচরে পরিচালকগণ কর্তৃক আর্থিক অনিয়ম সংঘটন, পর্ষদের নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার কারণে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি, ব্যাংকিং সুশাসন ও শৃঙ্খলা বিঘ্ন করার মাধ্যমে ব্যাংক-কোম্পানি ও আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে পর্ষদ কর্তৃক সম্পৃক্ত থাকার ঘটনা ঘটেছে।’
ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১–এর ৪৭ (১) এবং ৪৮ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও জনস্বার্থে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশে বলা হয়।
জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক সাত সদস্যের নতুন বোর্ড গঠন করেছে। যেখানে আগের পর্ষদ থেকে বাদ পড়েছেন রন ও রিক হক শিকদার। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও জনস্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন: ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা
এর আগে গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির এজিএম হওয়ার কথা ছিল।
জানা যায়, ব্যাংকটির এক পরিচালকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ ন্যাশনাল ব্যাংকের এজিএমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবেদনকারী পরিচালক দাবি করেছেন যে ব্যাংকের এজিএম যেন ভার্চুয়ালি না হয়ে সবার উপস্থিতিতে হয়।
ব্যাংকের ভার্চুয়াল এজিএমের বিরোধিতা করে গত ১৭ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে আবেদন করেন। তিনি সেসময় পরিচালক নিয়োগে ব্যাংকটির অনিয়মের অভিযোগও তোলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত নয় মাসে প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়ে ২৭ হাজার ৯৩১ কোটি হয়েছে।
এমআই