বিএসইসি সুত্র মতে, মার্জিন ঋণের বিষয়ে ইউসিবির কাছে বেশ কয়েকটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে। যেসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা নন-মার্জিনেবল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো গ্রাহকের সঙ্গে মার্জিন ঋণের চুক্তির নিয়মানুযায়ী করা হয় কি না। কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করতে মার্জিন ঋণ না দিলে তার মানদণ্ড এবং পদক্ষেপগুলো ইউসিবি কিভাবে নির্ধারণ করে। যেসব শেয়ারে বিনিয়োগ নন-মার্জিনেবল সে বিষয়টি পূর্বেই ঘোষণা দেওয়া হয় কি না। ঘোষণা না দিলে কেন হয় না।
জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী মার্জিন ঋণ না দিয়ে বাজারে গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি। ইউসিবি মার্জিন ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে, বিষয়টি গুজব আকারে ছড়ানোর কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে ইউসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) তলব করেছে বিএসইসি। ইউসিবি ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিএসইসিতে তাদের মার্জিন ঋণের তথ্য জানিয়েছে। তবে মার্জিন ঋণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে কমিশন। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে যাতে পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক গতি কেউ নষ্ট করতে না পারে সেদিকে নজর রেখেছে বিএসইসি। একই সঙ্গে ইউসিবিকে মার্জিন ঋণ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যার জন্য চিঠি দিয়েছে কমিশন। ব্যাখ্যার পর তাতে কোনো ধরনের আইন লঙ্ঘন হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
সম্প্রতি কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই বিমা কোম্পানির শেয়ারে মার্জিন ঋণ বন্ধ করার তথ্য মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ইউসিবি ক্যাপিটালের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এমন সিদ্ধান্তে বিমা কোম্পানির শেয়ারে ধস নেমেছে। এ কারণে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) মনোয়ার হোসেন নামে এক বিনিয়োগকারীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাইফুল আলম চৌধুরী এ লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন।
এদিকে বিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে ইউসিবি ক্যাপিটাল। অপরদিকে মার্জিন ঋণ না দেওয়ায় একজন বিনিয়োগকারী নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। ফলে ইউসিবির মার্জিন ঋণের বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। তবে মার্জিন ঋণের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিএসইসি।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, আমাদের ক্লায়েন্ট পুঁজিবাজারের নিয়মিত বৈধ বিও হিসাবধারী। তিনি শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি নিয়মিত বাজারে লেনদেন করেন। নিয়মিত বিনিয়োগকারীরা হিসেবে আমাদের ক্লায়েন্ট ক্লোজলি বাজার মনিটরিং করেন। তবে বিমা খাতের শেয়ারের অস্বাভাবিক পতন দেখেছেন। পরবর্তী সময়ে তিনি জানতে পারেন ব্রোকারেজ হাউজ বিমা খাতের শেয়ারে মার্জিন ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। নোটিশে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট তাদের গ্রাহকদের মার্জিন ঋণ দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। তারা লিখিতভাবে মার্জিন ঋণের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেবেন। একই সঙ্গে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়েছে ইউসিবি।
ইউসিবি ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রহমত পাশা বলেন, ইউসিবি মার্জিন ঋণ বন্ধ করেনি। আমাদের কাছে ১০৪ প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা রয়েছে। যেগুলোতে বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি মনে হয়। আর ঝুঁকি সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়। এরপরও যদি কোনো গ্রাহক নিতে চায় তখন তাকে মার্জিন ঋণ দেওয়া হয়। ইউসিবি গত সোমবারও বিমা খাতের কোম্পানির শেয়ারে ২৯ জন বিনিয়োগকারীকে প্রায় ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা মার্জিন ঋণ দিয়েছে। বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে প্রায় ৩০ কোটি টাকার মার্জিন সুবিধা বিনিয়োগকারীদের দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউসিবি ক্যাপিটালের এই প্রধান নির্বাহী। ইউসিবি সব সময় বিনিয়োগ বান্ধব। আমরা এমন কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই, যাতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।