সংগঠন দুটির নেতাদের দাবি, তার কাটার ফলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের কোনো ধরনের সময় না দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ইন্টারনেট ও ডিশ-সংযোগের ঝুলন্ত তার বা ওভারহেড ক্যাবল কেটে ফেলছে। এরই মধ্যে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্যাবল কাটা হয়েছে বলে তারা দাবি করছেন, যা নতুন করে আর ব্যবহারযোগ্য নয়। ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা (এনটিটিএন) সব জায়গায় না থাকার কারণে তাদের ঝুলন্ত তারের মাধ্যমে সেবা দিতে হচ্ছে। বিকল্প ব্যবস্থা পরিপূর্ণভাবে চালু হলে সংগঠন দুটি নিজেরাই তার নামিয়ে মাটির নিচ দিয়ে সেবাদান অব্যাহত রাখবে।
সংগঠন দুটি বলছে, আর ক্যাবল কাটা হবে না এবং বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যৌক্তিক সময় দেওয়া হবে—এমন লিখিত আশ্বাস পেলেই সংগঠন দুটি তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। তবে আজ শনিবার তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকার অথবা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এক নেতা।
এদিকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, শেয়ারবাজার, ব্যাংক, এটিএম বুথ, করপোরেট হাউজসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাতেই ব্রডব্যান্ডনির্ভর অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। সারা দেশে ক্যাবল টিভির সেবাও বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের অনলাইন স্কুল কার্যক্রমও বাধার মুখে পড়বে। এ ধর্মঘটে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ। জানা গেছে, এরই মধ্যে দক্ষিণ সিটি ৪৮টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৮৫টি বিদ্যুতের খুঁটি থেকে ঝুলন্ত ক্যাব?ল অপসারণ করেছে। উত্তরে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের কয়েকটি সড়ক ও গুলশান অ্যাভিনিউ সড়কের দুই পাশের ঝুলন্ত তারের জট অপসারণ করা হয়েছে। আরো কয়েকটি সড়কে অভিযান চালানো হয়েছে। ইন্টারনেটের তার কাটা পড়ায় অনেক এলাকার ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথগুলোতে সেবা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা।
দুই সিটির মেয়রদ্বয় বলছেন, সম্প্রতি সড়কে মাথার ওপর ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে বিপজ্জনকভাবে পেঁচিয়ে থাকা তারের জঙ্গল অপসারণে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন। মাটির নিচ দিয়ে এসব সংযোগ থাকার কথা থাকলেও যত্রতত্র মাথার ওপর দিয়ে ক্যাবল টানা হচ্ছে। এতে নগরীর সৌন্দর্য বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জনজীবনে ঝুঁকি বাড়ছে। বাড়ছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা। ঝুলতে ঝুলতে অনেক স্থানে তারগুলো মাটি পর্যন্ত স্পর্শ করছে। এ কারণে অনেক পথচারী ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারেন না। এগুলো থেকে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। এছাড়া ঝুলে থাকা ডিশ বা ইন্টারনেটের ক্যাবল থেকে অগ্নিকাণ্ডও ঘটছে। কখনো দেখা যায়, পুরোনো তারে ত্রুটি দেখা দিলে সেগুলো না কেটেই নতুন তার লাগিয়ে দেয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে তারের জঞ্জাল দিন দিন বেড়েই চলেছে।