পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর মুনাফা বেড়েছে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের। আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে উত্তলোন করা অর্থে নতুন মেশিনারিজ স্থাপনের পর উৎপাদন বৃদ্ধির সুফল হিসেবে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটির আয়-মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। তালিকাভুক্তির আগের বছরের (২০১৭ সাল) তুলনায় তালিকাভুক্তির পরের বছরে (২০১৯ সাল) কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা প্রায় ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। চলতি ২০১৯-২০ আর্থিক বছরেও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। আর্থিক বছরের প্রথম ছয় মাসে ইন্দো-বাংলা ফার্মার বিক্রয়লদ্ধ আয় ৯৪ শতাংশ ও কর-পরবর্তী মুনাফা ৮৮ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মো. ফারুক হোসেন অর্থসংবাদকে বলেন, ব্যবসা বাড়াতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং আইপিও’র অর্থে নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনের ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে তলিকাভুক্তির পর থেকে কোম্পানিটি এগিয়ে যাচ্ছে। পুুঁজিবাজার থেকে তোলা অর্থে এরইমধ্যে নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে উৎপাদন বাড়ছে। সেইসঙ্গে উৎপাদিত ওষুধের বাজার বাড়াতে আমরা নতুন কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। যার প্রতিফলন আয়-মুনাফায় দেখছি। এগিয়ে চলার ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮ সালে আইপিও’র মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস। এর আগের আর্থিক বছরে (২০১৭ সালে) কোম্পানিটির আয় ছিল প্রায় ৬১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ওই আর্থিক বছরে কোম্পানিটি প্রায় আট কোটি ৮৩ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিলো। আর তালিকাভুক্তির বছরে কোম্পানিটির আয় ছিলো প্রায় ৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, ওই বছরে প্রায় নয় কোটি ৮৪ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিলো কোম্পানিটি।
আইপিও’র অর্থে নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপনের পরের আর্থিক বছরে (২০১৯ সালে) কোম্পানিটির আয় প্রায় ৭৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বছর শেষে কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে প্রায় ১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ হিসেবে তালিকাভুক্তির আগের বছরের তুলনায় তালিকাভুক্তির পরের বছরে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় প্রায় ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা ২০ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা প্রায় ছয় কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা ৭৬ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে ইন্দো-বাংলা ফার্মার এগিয়ে চলার ধারা চলতি ২০১৯-২০ আর্থিক বছরেও দৃশ্যমান।২০১৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে উৎপাদিত ওষুধ বিক্রি করে প্রায় ৪৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা আয় করেছে কোম্পানিটি। সব ব্যয় মেটানোর পর অর্ধ-বার্ষিকে প্রায় নয় কোটি ৪২ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা দেখিয়েছে ইন্দো-বাংলা ফার্মা। এর আগের আর্থিক বছরের তুলনায় কোম্পানিটির আয় প্রায় ২১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বা ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। সেইসঙ্গে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা প্রায় চার কোটি ৪২ লাখ টাকা বা ৮৮ শতাংশ বেড়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে ইন্দো-পাক ফার্মাসিউটিক্যালস ওয়ার্কস পথচলা শুরু করে। স্বাধীনতার পর ১৯৮২ সালে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস নামকরণের পর সরকারিভাবে কোম্পানিটি বরিশালের স্বনামখ্যাত দুই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়। ২০১৪ সালে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস নামে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রুপান্তর হয় কোম্পানিটি। ব্যবসায়িকভাবে ভালো অবস্থানে থাকা কোম্পানিটি মূলধন জোটাতে ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে আসে। ১১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ওই কোম্পানিটির ৫১ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে। এর বাইরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আট দশমিক ৫২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক শূণ্য চার শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৯ দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২০ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।