জাতির গৌরব আর অহংকারের এ দিনটিতে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে নামে লাখো মানুষের ঢল। তাদের হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ বেদি। কিন্তু এ বছর মহামারী করোনার কারণে সীমিত আকারে জনসমাগম করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন না মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। তবে তাদের পক্ষে দুইজন সামরিক সচিব জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
এরপর মন্ত্রী পরিপষদ সদস্য, দেশি-বিদেশি মেহমান ও কুটনৈতিকসহ ভিআইপি ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
এদিকে বিজয় দিবসে আগত দর্শনার্থীসহ সকলের নিরাপত্তার জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধিসহ ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে সকলের গতিবিধি অনুসরণের পাশাপাশি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য পুরো এলাকায় বসানো হয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার দ্বিগুণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দু’পাশ ও ব্রিজসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বসানো হয়েছে বাড়তি চেকপোস্ট। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বাড়ানো হয়েছে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি।
অন্যদিকে বিজয় দিবসকে ঘিরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থান মেরামত ও ডিভাইডারসহ আশপাশের গাছগুলোতে রঙ করা হয়েছে। প্রধান ফটকে ঢোকার জন্য জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করতে বড় করে মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, অন্যবারের তুলনায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ বছর স্মৃতিসৌধকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। শেষ করা হয়েছে ধোয়া-মোছা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও রং-তুলির কাজ। স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন ধাপে রং-তুলির আঁচড়ের আল্পনায় অপরূপ সাজে সাজানো হয়েছে। স্মৃতিসৌধ মিনারের সম্মুখভাগে হেরিংবন্ড ধরে নিচু জায়গাগুলোয় গাঢ় সবুজ ঘাসের মধ্যে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনিসহ নানা রঙের ফুলগাছের চারা। যা প্রতিবারের মতো এবারও সৌধ এলাকাকে এনে দিয়েছে রঙিন ও বর্ণিল রূপ।