ইউসিবি ক্যাপিটাল ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ‘রাইজিং অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’ শিরোনামে ৯ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি দুবাইতে ‘রোড শো’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ওই রোড শোতে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সম্ভাবনা, বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে। প্রবাসী বিনিয়োগকারী, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ছোট ছোট দলের সঙ্গে আলোচনা করবে বিএসইসি। এতে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বাড়বে এবং শেয়ারবাজারের উন্নয়ন হবে বলে মনে করে বিএসইসি।
এর আগে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সাক্ষরিত ডিজিটাল বুথ খোলার নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মতিক্রমে যেকোনো স্টক ব্রোকার ডিজিটাল বুথের জন্য কমিশনে আবেদন করতে পারবে। সিটি করপোরেশনের মধ্যে, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়াও দেশের বাইরেও ডিজিটাল বুথ স্থাপন করা যাবে। তবে দেশের বাইরে স্থাপনের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদনের পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিতে হবে। ডিজিটাল বুথ পরিচালনার জন্য স্টক ব্রোকারের প্রয়োজনীয় কাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা, আর্থিক সক্ষমতা ও জনবল থাকতে হবে।
আর বিদেশে বুথ খুলতে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্রোকারকে নন-জুডিশিয়াল ৩০০ টাকার স্টাম্পে অমীমাংসিত দাবি, বৈধ দাবি বা অপরিশোধিত দাবির ক্ষেত্রে তারা এককভাবে দায়বদ্ধ থাকবে বলে লিখিত দিতে হবে। ব্রোকার হাউজের পর্ষদ মনোনীত ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা যেকোনো শীর্ষ কর্মকর্তা বা পরিচালকের স্বাক্ষর থাকতে হবে সেই স্টাম্পে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট দুবাইতে ডিজিটাল বুথ স্থাপনের অনুমতি চেয়ে ডিএসই ও সিএসইর পাশাপাশি বিএসইসিতে আবেদন জানায়। ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে দুবাইতে ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। বিষয়টি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকেও অবহিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিদেশে ডিজিটাল বুথ চালু হলে বিদেশে অবস্থানরত অনেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। বিনিয়োগকারী বাড়লে পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়বে। আর লেনদেন বাড়লে পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (ইন্টারমিডিয়ারিজ) আয় বাড়ার পাশাপাশি সক্ষমতা বাড়বে। এতে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক হবে।
বিদেশে অবস্থান করা অনেক সম্পদশালী বাংলাদেশি রয়েছেন। যাদের অলস অর্থ রয়েছে। তাদের ওই অর্থ পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দেশের শিল্পায়নে কাজে লাগাতে চায় সরকার। তাই ডিজিটাল বুথ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। এতে প্রবাসীরা সরাসরি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন এবং নিজের বিনিয়োগ নিজেই পরিচালনা করতে পারবেন।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও মোহাম্মদ রহমত পাশা অর্থসংবাদকে বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বসবাস করেন। তারা নানা ভাবে দেশে বিনিয়োগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা যা বিনিয়োগ করেন তাতে রিটার্নের পরিমাণ যথাযথ নয়। বিশেষ করে করোনাকালীন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে তাদের রিটার্ন অনেক কমে গিয়েছে। এখন তারা ক্যালকুলেটিভ রিস্ক নিয়ে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবেন। একই সঙ্গে দেশের অর্থবাজারেও এর ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যা সার্বিক ভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।