সোনালি রোদের ছোঁয়ায় পলাশগুলো আজ জেগে উঠবে। মৌমাছিদের গুঞ্জরণ, মাতাল হাওয়া ছুঁয়ে যাবে তনুমন। বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুলের রঙেই আজ সাজবে তরুণ-তরুণীরা। তরুণীরা পরবে বাসন্তী রঙের শাড়ি। খোঁপায় গুঁজবে ফুল আর হাতে পরবে কাঁচের চুড়ি। তরুণরাও বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পরে নামবে বাংলার পথে ঘাটে। শুধু শহরেই নয়, বাংলার গ্রামীণ জনপদেও আজ ঝিরি ঝিরি বাতাসে ধরা দেবে বসন্ত।
এ বসন্ত শুধু শুধু উচ্ছ্বাসের রং ছড়ায় না, আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্তরঙিন স্মৃতির কথাও মনে করিয়ে দেয়। ১৯৫২ সালের ৮ ফাল্গুন বা একুশের পলাশরাঙা দিনের সঙ্গে তারুণ্যের সাহসী উচ্ছ্বাস আর বাঁধভাঙা আবেগের জোয়ারও যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে।
বাঙালির জীবনের সঙ্গে একাকার হয়ে আছে বসন্ত। বসন্তের বন্দনা আছে কবিতা, গান, নৃত্য আর চিত্রকলায়। বসন্তের প্রথম দিনকে বাঙালি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে।
তবে বরাবরের মতো এবার ফাগুনে নেই অমর একুশে গ্রন্থমেলা। করোনা মহামারিতে থমকে আছে প্রাণের সেই বই মেলা।
২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদের সভায় ২০২০ সালের সরকারি ছুটির তালিকার অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছুটির তালিকা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ কয়েকটি জাতীয় দিবসের বাংলা তারিখে পরিবর্তন এসেছে।
বসন্ত বরণের আয়োজন করেছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ। ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত হবে বসন্ত উৎসব। আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট জানান, সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ১০টা পর্যন্ত চলবে। এবার কোভিড-১৯ এর কারণে অনুষ্ঠানের স্থল পরিবর্তন ও অনুষ্ঠান সংকুচিত করা হয়েছে। এছাড়াও একই দিনে বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে গেণ্ডারিয়ার সীমান্ত গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ এবং এবং উত্তরার আজমপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এ সকল উৎসব স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালিত হবে।