বড় জয়ে শেষ অধিনায়ক মাশরাফির অধ্যায়

বড় জয়ে শেষ অধিনায়ক মাশরাফির অধ্যায়
ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গেছিল প্রথম ইনিংসের পরই। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪৩ ওভারে ৩২২ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে এ রান করাই ছিলো জিম্বাবুয়ের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেটিকে আরও কঠিন করে দিয়ে বৃষ্টি আইনে তাদের নতুন লক্ষ্য দেয়া হয় ৪৩ ওভারে ৩৪২ রান।

যা তাড়া করতে নেমে কখনওই জয়ের পথে ছিলো না জিম্বাবুয়ে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাইজুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমানদের বোলিং তোপে তারা অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ২১৮ রানে। বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ১২৩ রানের বড় ব্যবধানে। একইসঙ্গে ৩-০ ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেই শেষ হলো অধিনায়ক মাশরাফির অধ্যায়।

জিম্বাবুয়ে শিবিরে প্রথম ওভারেই আঘাত হেনেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। যা চলতে থাকে ৩৮তম ওভার পর্যন্ত। মাশরাফি আর উইকেট পাননি পরে। তবে সাইফউদ্দিন ৪, তাইজুল ৩, মোস্তাফিজ ও অভিষিক্ত আফিফ নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।

যার সুবাদে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজার শেষ ম্যাচ ও সিরিজটি রাঙিয়ে থাকল ১২৩ রানের বড় ব্যবধানের জয়ে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের এটি ১৩তম হোয়াইটওয়াশের রেকর্ড। যার মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পাওয়া গেলো পঞ্চমবারের মতো।

সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে জিম্বাবুয়ের পক্ষে লড়েছেন কেবল একশতম ওয়ানডে খেলতে নামা সিকান্দার রাজা। তিনি খেলেছেন ৬১ রানের ইনিংস। এছাড়া ওয়েসলে মাধেভের ৪২, শন উইলিয়ামস ৩০ ও রেগিস চাকাভা করেছেন ৩৪ রান।

এর আগে ব্যাট হাতে রূপকথা লিখেন তামিম ইকবাল আর লিটন দাস। ওয়ানডেতে দেশের ইতিহাসের রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে দলকে এনে দেন পাহাড়সমান পুঁজি। এই যুগলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভর করেই কার্টেল ওভারে (৪৩ ওভার) নেমে আসা ম্যাচে ৩ উইকেটে ৩২২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ।

অধিনায়ক হিসেবে নিজের বিদায়ী ম্যাচটি খেলতে নেমে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরেছেন মাশরাফি। জিম্বাবুয়ে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, বাংলাদেশকে পাঠায় ব্যাটিংয়ে।

ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা করেন বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং লিটন দাস। দু’জনই আগের দুই ম্যাচে খেলেছেন দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরির ইনিংস। প্রথম ম্যাচে লিটন অপরাজিত ১২৬ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম খেলেন ১৫৮ রানের ইনিংস।

এমন দুই ব্যাটসম্যান যদি একইসঙ্গে জ্বলে ওঠেন? প্রতিপক্ষের তবে বারোটা বাজারই কথা, যেটা টের পেল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের দুই ওপেনারই আজ (শুক্রবার) একসঙ্গে জ্বলে ওঠেন।

দেখেশুনে শুরু করার পর মাত্র ৫২ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন তামিম-লিটন। এরপর ১১০ বলে ছুঁয়ে ফেলেন ১০০ রানের জুটি। পরের ৫০ পার করতে একটু সময় নিয়েছেন তারা। ১৭৮ বলে দেড়শ ছোঁয়া হয় এই জুটির। তারা ১৮২ রানে পৌঁছার পর ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। তখন ৩৩.২ ওভার খেলা হয়েছে।

আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকে বৃষ্টিতে। দ্বিতীয়বার যখন শুরু হয়, তখন ওভার কমিয়ে ৪৩ করা হয়। বাংলাদেশ পায় আর ১০ ওভারের (৯.৪ ওভার) মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ।

ওভার কমে যাওয়ায় রীতিমত মারমুখী হয়ে ওঠেন তামিম-লিটন। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটাতে থাকেন মাঠ জুড়ে। এরই ফাঁকে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটির রেকর্ডটিও নিজেদের করে নেন এই যুগল।

২০১৭ সালে কার্ডিফে সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। সেটি ছিল এতদিন ওয়ানডে ক্রিকেটে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি।

লিটনের পর সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিমও। ৯৮ বলে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন দেশসেরা ওপেনার। দুই সেঞ্চুরিয়ান তারপরও বেধড়ক পেটাতে থাকেন জিম্বাবুইয়ান বোলারদের। একটু বেশিই বিধ্বংসী ছিলেন লিটন। ১৩৫ বলে ১৫০ রান স্পর্শ করেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান।

যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, লিটন দুইশও কি আজ (শুক্রবার) করে ফেলেন কি না- ভাবছিলেন টাইগার সমর্থকরা। শেষতক লিটনের চোখ ধাঁধানো ইনিংসটা থেমেছে ১৭৬ রানে। ১৪৩ বলের বিধ্বংসী ইনিংসে ১৬টি চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা হাঁকান এই ডানহাতি, গড়েন দেশের ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডও।

এরপর মাহমুদউল্লাহ (৩) সুবিধা করতে পারেননি। মাম্বার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। ৩ বলে ৭ রানে ফিরে যান আফিফ হোসেন ধ্রুবও। তবে তামিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিতই ছিলেন। ১০৯ বলে ৭ চার আর ৬ ছক্কায় দেশসেরা এই ওপেনার খেলেন ১২৮ রানের ইনিংস। এটি তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা কারা?
সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েই বছর শেষ করলেন রোনালদো
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ৭১ শতাংশ
ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের
ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে বাংলাদেশের নাহিদা
বাংলাদেশ ম্যাচে কে এই নারী আম্পায়ার
সুখের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বেরসিক বৃষ্টির জয়
টাইগারদের আগামী বছরের কর্মসূচিতে নেই অস্ট্রেলিয়া-ইল্যাংন্ড
মাশরাফির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন সোহান
২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা হতে পারে জানুয়ারিতে