শেয়ার হস্তান্তরে মূলধনি আয় নিরূপণের প্রস্তাব আইসিএবি’র

শেয়ার হস্তান্তরে মূলধনি আয় নিরূপণের প্রস্তাব আইসিএবি’র
দেশে বসবাসকারী নাগরিকদের মধ্যকার শেয়ার হস্তান্তরের ওপর মূলধনি আয় নিরূপণের প্রস্তাব করেছে দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।

সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে অনেকে শেয়ার হস্তান্তরের সময় অভিহিত মূল্যে (ফেসভ্যালু) হস্তান্তর করে। তবে শেয়ারপ্রতি মোট সম্পদ মূল্য থাকে অনেক বেশি। যার ফলে সরকার মূলধনি মুনাফার ওপর কর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়া ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল ফোন অপারেটর ছাড়া অন্যান্য কোম্পানির করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে আইসিএবি।

সংস্থাটি আরও বলছে, বাংলাদেশে করপোরেট করহার (৩২.৫%) এই অঞ্চলের অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বেশি। যেমন ভারতে করপোরেট কর ২৫%-৩০%, ইন্দোনেশিয়ায় ২২% ও থাইল্যান্ডে ২০%। এ ছাড়া বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামে এই হার ২০%। করপোরেট কর কমালে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। একই সঙ্গে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণেও তা সহায়তা করবে বলে মনে করে সংস্থাটি।

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বাস্তবায়নের জন্য করপোরেট করহার কমানোসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে আইসিএবি। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যালয়ে গতকাল রোববার প্রাক্-বাজেট আলোচনায় প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন আইসিএবির সভাপতি মাহমুদউল হাসান খসরু। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সভাপতিত্ব করেন। আইসিএবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

আইসিএবি কোম্পানির করপোরেট শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশের ওপর আয়কর ২০% থেকে কমিয়ে ১০% করার প্রস্তাব দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, অনেক দেশ লভ্যাংশের ওপর কর আরোপ করে না। লভ্যাংশের ওপর করহার কমানো হলে কোম্পানির অর্থ সাশ্রয় হবে। এতে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়বে।

বাংলাদেশের কোনো শিল্প বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কোনো বিদেশি নাগরিক নিয়োগ করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে আইসিএবি। তারা বলছে, বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে শিল্প বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। তাঁদের বেতন-ভাতা বাবদ বিপুল অর্থ পরিশোধ করা হলেও এর বিপরীতে সরকার কোনো কর পায় না, বরং দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়।

বিদেশি কোম্পানির যোগাযোগ, শাখা ও প্রকল্প কার্যালয়গুলোকে তাদের বৈশ্বিক আয় থেকে পৃথক করে বাংলাদেশে অর্জিত ও নিরীক্ষক কর্তৃক প্রত্যায়িত আয় ঘোষণা করা এবং রিটার্নের সঙ্গে তা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছে আইসিএবি। তারা বলেছে, বিদেশি সংস্থার বৈশ্বিক আয়কে বাংলাদেশের করের আওতায় আনতে পিই ধারণাটি চালু করা হয়েছে। তবে যথাযথ গাইডলাইনের অভাবে অনেকের আয় বাংলাদেশের করজালের আওতার বাইরে রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের মোট বিক্রয় বা টার্নওভারের ন্যূনতম সীমা ৫ কোটি থেকে বাড়িয়ে ১০ কোটি টাকায় নির্ধারণ এবং শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের সেই আদেশ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে আইসিএবি। তাদের যুক্তি, যেহেতু শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এবং প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকেরা বিক্রির ওপর মূসক বা ভ্যাট দেয় না, তাই তাদের ভ্যাট সফটওয়্যারের আওতা থেকে বাদ দিলে সেটি ব্যবসাবান্ধব হবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ