আবেদনের সময় ঠিক করতে আগামী সোমবার (২৯ মার্চ) বা বুধবার (৩১ মার্চ) সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পূর্ণ কমিশনের বৈঠকে বসছে। সেখানে সব বিষয় বিবেচনা করে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।
রোববার (২৮ মার্চ) পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন একটি অনলাইন পোর্টালকে জানান, ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়ছে এটা নিশ্চিত। তবে কতদিন বাড়বে তা ঠিক করতে পূর্ণ কমিশনের বৈঠকে ঠিক করা হবে।
কতদিন বাড়ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সময় বাড়ানো হবে। সেই তারিখ ৩১ মার্চের আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে।’
রোববার দুপুর পর্যন্ত প্রায় চার লাখ আবেদন পড়েছে। অন্যান্য সাধারণ বিসিএসগুলোতে চার লাখ বা তার কম বেশি আবেদন পড়ে। সে হিসেবে ৪৩তম বিসিএসে আবেদনের সংখ্যা সন্তোষজনক। তারপরও ২৭ ফেব্রুয়ারি পর থেকে ২৪ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে যারা স্নাতক শেষবর্ষ বা শেষ সেমিস্টার পরীক্ষার্থী ছিল ২৪মে যদি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে তবে এ সময়টুকু তাদের দেওয়ার চিন্তা করছে পিএসসি। সে হিসেবে ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মে পর্যন্ত প্রায় তিনমাস পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এ সময়টুকু বিবেচনা নিয়ে আবেদনের সময় বাড়ানো হতে পারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার পরিস্থিতি যদি ঊর্ধ্বমুখী থাকে তবে ২৪ সরাসরি হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস এবং শুধু পরীক্ষাগুলো আগের মত চালু করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শ্রেণীকক্ষে ক্লাস শুরু হবে ২৪ মে। তার আগে ১৭ মে আবাসিক হলগুলো খুলবে। খোলার আগে কোনো পরীক্ষা হবে না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা ও হল খোলার ঘোষণা দিয়েছিল, সে সিদ্ধান্তও বাতিল হবে। সেজন্য প্রয়োজনে চলমান বিসিএস পরীক্ষা পেছানো হবে।
এর আগে সেশনজটে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়াতে সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) চিঠি দিয়েছিল। সে চিঠি আমলে নিয়ে আবেদনের সময় ৩১ জানুয়ারি থেকে দুই মাস বাড়িয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।
করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নিতে পারেনি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময়সীমা বাড়াতে অনুরোধ করে। তাদের যুক্তি ছিল, করোনার কারণে প্রায় এক বছর বন্ধ থাকায় অনার্স পর্যায়ের অনেক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এসব পরীক্ষা শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা যাতে অ্যাপিয়ার্ড হিসেবে বিসিএসে আবেদন করতে পারেন সে সুযোগ চায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময় বাড়ানোর কথা বলে। এর প্রেক্ষিতে পিএসসি দুই মাস সময় বাড়ায়।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে এক হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসনে ৩০০ জন, পুলিশে ১০০ জন, পররাষ্ট্রে ২৫ জন, শিক্ষায় ৮৪৩ জন, অডিটে ৩৫ জন, তথ্যে ২২ জন, ট্যাক্সে ১৯ জন, কাস্টমসে ১৪ জন ও সমবায়ে ১৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।