বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
চার দফা প্রস্তাবের বাকিগুলো হল- বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষী বন্ড’ নামে আরও একটি নতুন বন্ড বাজারে ছেড়ে টাকা সংগ্রহ করে সেগুলো প্রয়োজনীয় খাতে ব্যবহার করা। সাময়িকভাবে এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি) খাতে আরোপিত করহার কমানো এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ দেয়ার হার পুনর্বিবেচনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এসব বিষয় উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি প্রতিবেদন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজারে বন্ড ছেড়ে টাকা সংগ্রহ করা ইতিবাচক। এতে সুদের হার বেশি পড়ে। তবে অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবহিদিতা থাকতে হবে। তাহলে বন্ডের উদ্দেশ্য সফল হবে।
জানা গেছে, করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ঋণনির্ভর যেসব প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলোর অনেক অর্থ অলস পড়ে রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে ব্যাংকগুলোতে অলস পড়ে থাকা অর্থ। একই সঙ্গে প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও বাড়ানো হবে টাকার জোগান। প্রয়োজনে দেওয়া হবে নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ। তবে বন্ডের আকার সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন পাওয়া গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব বন্ড বাজারে ছাড়ার বিষয়ে কাজ করবে।
করোনার আঘাতে এখন পর্যন্ত বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের অনেক শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন। এদের কর্মসংস্থানের জন্য এ বন্ডের অর্থ ব্যবহার করা হবে। এটি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট গ্রুপ, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিক্রি করা হবে। প্রাপ্ত অর্থ কম সুদে ও সহজ শর্তে ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘বঙ্গবন্ধু শতবর্ষী বন্ড’ চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটিও বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক সংস্থার কাছে বিক্রি করে টাকা তোলা হবে। এসব টাকায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন খাতে অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করা হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে এখন সুদের হার অনেক কম। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকেও এসব বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করা যেতে পারে। সংগৃহীত অর্থ শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সব পর্যায়ে দরিদ্র ও যাদের অর্থের প্রয়োজন রয়েছে ওইসব খাতে পৌঁছে দিয়ে টাকার চাহিদা অনুযায়ী বণ্টন করা যেতে পারে। বাজারে বন্ড ছেড়ে টাকা সংগ্রহ করলে সুদ বেশি দিতে হবে। এক্ষেত্রে বেশি সুদে বন্ড ছেড়ে অর্থ নিয়ে কম সুদে বিতরণ করলে বাকি সুদ সরকার থেকে ভর্তুকি হিসাবে বন্ডের ক্রেতাদের দেওয়া হবে।