একটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে ফোক গানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফোক গানকে ওয়ার্ল্ড মিউজিকও বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে জারি, সারি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, মুর্শিদী, গম্ভীরাসহ অসংখ্য ফোক গানের সম্ভার রয়েছে।
এদের মধ্যে লালন সাঁই, হাছন রাজা, আব্বাসউদ্দীন, আব্দুল আলীম, মমতাজ, সালমা, বিউটিরা ফোক গান গেয়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। ফোক গান দিয়ে তারা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছেন। বর্তমান সময়ে লালন ব্যান্ড, জলের গান কিংবা অর্ণবের মতো তরুণ শিল্পীরা ফোক-ফিউশনে শ্রোতা হৃদয়ে ঝড় তুলেছেন।
এছাড়া ফোক-ফিউশন শুধু এই বঙ্গদেশেই নয়; আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দারুণ সমাদৃত। আমেরিকার বব ডিলান, বব গিবসন এবং জন ডেনভারের মতো নামি-দামি শিল্পীরা ফোক গান গেয়ে আজ বিশ্বের দরবারে সমাদৃত।
এফ এম ইকবাল বিন আনোয়ার তার নজরুলগীতির চর্চাটা চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। কর্মব্যস্ততার ফাঁকগলে রুটিন মেনে নিয়মিত সঙ্গীতচর্চা করে যাচ্ছেন। গানের ভুবনে নতুন অতিথি হলেও ইকবাল বিন আনোয়ারের গানের চর্চা নতুন নয়। সেই ছোট্টবেলা থেকেই গানের প্রতি অনুরক্ততা তার। গানকে ভালোবেসে সঙ্গীত জগতে পা তার। ইকবাল বিন আনোয়ার গানের ভুবনে অতিথি পাখি হয়ে নয়; ধ্রুততারা হয়ে বাংলার সঙ্গীতাকাশকে আলোকিত করতে চান। গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের আনন্দ দিতে; শ্রোতাদের ভালোবাসা পেতেই এই জগতে আসা তার।
একজন স্বনামধন্য কর্পোরেট কর্মকর্তা (ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক), ক্রীড়াপ্রেমী, সংগঠক, সাবেক খেলোয়াড়, শিক্ষক- এতদিন এই পরিচয়েই পরিচিত ছিলেন ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)। এবার তার পরিচয়ে নতুন এক পালক যুক্ত হয়েছে। সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। নতুন পরিচয়ের বয়স এই তো বছর দেড়েক হতে চলল। গত বছর করোনার শুরু থেকেই নিজের পুরনো প্রতিভাকে (গান) আরো একবার শাণিত করার, গান গেয়ে নিজেকে সকলের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস চালান ডন। আর তার এ যাত্রায় বন্ধুর হাতটি বাড়িয়ে দেন এটিএন বাংলার সম্মানিত চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান।
নতুন নতুন কণ্ঠশিল্পী তৈরিতে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা এবং এর কর্ণধার ড. মাহফুজুর রহমানের সুখ্যাতি সকলের জানা। নতুন শিল্পী ইকবাল বিন আনোয়ারের পথচলাও এই এটিএন বাংলাতেই। তবে এটিএন বাংলার তালিকাভূক্ত শিল্পী হতে কঠিন এক পরীক্ষা দিয়ে; সেখানে পাশ নম্বর পেয়ে তবেই নির্বাচিত হয়েছেন ডন। এটিএন বাংলা চ্যানেলে গত বছর রোজার ঈদে প্রথমবারের মতো একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে পেশাদার শিল্পী হিসেবে পথচলা শুরু ইকবাল বিন আনোয়ার ডনের।
কর্মব্যস্ততায় বহু বছর গান থেকে দূরে ছিলেন। তবে বাড়িতে গানের চর্চাটা কম-বেশি চালু ছিল। ঘরোয়া অনুষ্ঠান বলুন কিংবা শিক্ষক থাকাকালীন কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানের জন্য ডাক পড়ত তার। গানের প্রতি ডনের ভালোলাগা, ভালোবাসা সেই ছোটবেলা থেকেই। গানের শুরুটা জন্মস্থান টাঙ্গাইলে। ওস্তাদ ওয়াহিদুজ্জামান শিশিরের কাছে হাতে-খড়ি। খেলাধুলা এবং সংস্কৃতিচর্চা দুটোই ছিল ডনের পরিবারে। সংস্কৃতিমনা এক পরিবারের সন্তান তিনি। ডনের মা তো ছেলের গানের বিরাট ভক্ত ও পরামর্শকও। ডন আবার নিজের মাকে গানের ওস্তাদ বলেও মানেন। বাড়িতে যখন গান করেন, সেখানে সামান্য ভুল-ত্রুটি হলে মা সঙ্গে সঙ্গে ধরে বসেন। এতটুকু ভুলত্রুটিও মায়ের কান এড়ায় না। ভালোবেসে গানের জগতে পা রাখা হলেও এখন পেশাদার হিসেবে নিয়মিত গানের প্রোগ্রাম করছেন; গান গাইছেন ডন। গানের জন্য অনেকের প্রশংসাও পাচ্ছেন। আরো ভালো গাইতে অনেকে উৎসাহ ও পরামর্শ দিচ্ছেন।