বেক্সিমকো লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের বেক্সিমকো টেক্সটাইল, বেক্সিমকো ডেনিমস(বর্তমানে বেক্সিমকোর সঙ্গে একীভূত) ও বেক্সিমকো সিনথেটিকস নামের ৩টি ডিবেঞ্চারের সব অর্থ পরিশোধ করে দেওয়ায় প্রত্যয়ন পত্র ও জামানত মুক্ত করে দেওয়ার জন্য গত ২৯ এপ্রিল ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে চিঠি দেয়। এর আলোকে আইসিবি শেষবারের মতো কোন ডিবেঞ্চারহোল্ডারের কোন ধরনের পাওনা থাকলে, তার জন্য ৫ জুনের মধ্যে দাবি জানানোর জন্য নোটিশ প্রকাশ করে।
এই নোটিশের আলোকে গত ২৪ মে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে বেক্সিমকো লিমিটেড ৩টি ডিবেঞ্চার সমাপ্তি করার উদ্যোগ নিয়েছে এবং ডিবেঞ্চারহোল্ডারদেরকে আগামি ৫ জুনের মধ্যে পাওনা দাবি করার (যদি কোন দাবি থাকে) জন্য ট্রাস্ট্রির নোটিশ জারির কথা বলা হয়েছে। আর এটাকে কেন্দ্র করেই মূলত গড়ে উঠেছে ভুল বোঝাবুঝি।
অথচ গত ১৮ মে বেক্সিমকো লিমিটেডের ডিবেঞ্চারের সকল পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছে ট্রাস্টি। ওই প্রত্যয়ন পত্রে ট্রাস্টি উল্লেখ করেছে, ইস্যুকৃত ডিবেঞ্চারের বিপরীতে আইসিবি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োহকারীগণের সমুদয় পাওনা বেক্সিমকো লিমিটেড পরিশোধ করেছে। এখন আর পাওনা নেই। তাই বেক্সিমকো লিমিটেডের বন্ধককৃত দলিলাদি ও চার্জ ডকুমেন্ট অবমুক্ত করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গণমাধ্যমে ওই খবর প্রকাশের পরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ডিবেঞ্চারের সমাপ্তিতে বেক্সিমকো লিমিটেডকে অনেক টাকা পরিশোধ করতে হবে, কিন্তু সেই পরিমাণ অর্থ কোম্পানির কাছে নেই বলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যা বেক্সিমকোর শেয়ার দরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এতে করে দেখা যায় বেক্সিমকোর ২৩ মে’র ৮৮.৭০ টাকার শেয়ারটি ২৫ মে লেনদেন শেষে ৮৬.১০ টাকায় নেমে এসেছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ২.৬০ টাকা বা ২.৯৩ শতাংশ।
একইসঙ্গে বেক্সিমকো গ্রুপের আরেক তালিকাভুক্ত কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ডিবেঞ্চারের খবরটি। ওই খবরের পরে ২৩ মে’র ১৭৩.৪০ টাকার বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার ২৫ মে ১৭১.৫০ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ ২দিনের ব্যবধানে শেয়ারটির দর কমেছে ১.৯০ টাকা বা ১.১০ শতাংশ।
ডিবেঞ্চার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে জানিয়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা জামানুল বাহার বলেন, আমরা ৩টি ডিবেঞ্চারের অর্থ ইতিমধ্যে পুরোপুরি পরিশোধ করে দিয়েছি। এ কারনে ট্রাস্টির কাছে জামানত বা বন্ধককৃত দালিলাদি ও চার্জ ডকুমেন্ট অবমুক্ত করে দেওয়ার জন্য চিঠি দেই।
এর আলোকে ট্রাস্টি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ ও নিজেদেরকে দায়মুক্ত করার জন্য শেষবারের মতো কোন ডিবেঞ্চারহোল্ডারের পাওনা থাকলে, তার জন্য দাবি জানাতে নোটিশ জারি করে। কারণ কারো যদি পাওনা থেকে থাকে, তার জন্যতো ট্রাস্টিকেই জবাবদিহি করতে হবে। তাই সব পাওনা পরিশোধের পরেও ট্রাস্টি কারও পাওনা থাকলে, তার জন্য দাবি জানিয়ে নোটিশ দেয়।
এখন এই নোটিশ গণমাধ্যমে সংবাদ আকারে প্রকাশের পরেই বিনিয়োগকারীসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন বেক্সিমকো লিমিটেডকে এখন বিপুল অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে। এতে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।