শনিবার (১২ জুন) ভার্চুয়াল সেমিনারে অংশ নিয়ে তারা এই দাবি জানান। এ সময় তারা বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষকে সম্পৃক্ত করার সুপারিশ করেন।
‘বাজেট ২০২১-২২: উপকূলীয় সুরক্ষা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড (সিএসআরএল), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্ট একশান নেটওয়ার্ক (ক্লিন)।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিএসআরএলের জিয়াউল হক মুক্তার সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তৃতা করেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মীর মোশতাক আহমেদ রবি, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, নাহিম রাজ্জাক, আশেক উল্লাহ রফিক, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও জাফর আলম, পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আইনুন নিশাত, সিপিআরডির মো. শামসুদ্দোহা ও ক্লিন-খুলনার হাসান মেহেদী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের সৈয়দ আমিনুল হক।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় সুরক্ষা ব্যতীত উন্নত বাংলাদেশের কল্পনা করা অসম্ভব। তাই উপকূলের সমস্যাকে কোনও অঞ্চলের আলাদা কোনও সমস্যা হিসেবে বিবেচনা না করে এটিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। বেড়িবাঁধ উন্নয়ন নীতিমালা তৈরির পাশাপাশি এই বিষয়ে রোডম্যাপের তৈরির কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, বাজেট বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতা যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে, বাঁধ বিষয়ক পরিকল্পনায় এই পরিস্থিতি অনুপস্থিত। ‘ডেল্টা প্ল্যান’ এর আওতাধীন প্রকল্পগুলি পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের দুর্যোগ পূর্বাভাসকে বিবেচনা না করেই গ্রহণ করেছে।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য পরিবেশ বান্ধব নীতিমালা তৈরি করতে হবে। এই নীতিমালায় উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প আয় তৈরিতে সক্ষম শিক্ষা বিস্তারকেও অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।
মূল প্রবন্ধে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকার বাজেট বরাদ্দ গতানুতিক ও সংকট মোকাবেলায় অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে তিনটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রতি বছর কমপক্ষে ১২-১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে, তাৎক্ষণিক বাঁধ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থানীয় সরকারকে বাজেটসহ দায়িত্ব দিতে হবে এবং উপকূলীয় সুরক্ষা, বিশেষত প্রাকৃতিক সুরক্ষা, উপকূলীয় মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য কারিগরি শিক্ষাকে একটি কার্যকরী বিকল্প হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।